পটুয়াখালী প্রতিনিধি
পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ঘিরে পাল্টে যাচ্ছে পটুয়াখালীসহ গোটা দক্ষিনাঞ্চলের উন্নয়ন চিত্র। সরকার ঘোষিত অর্থনৈতিক জোন গড়ার লক্ষ্যে দ্রুত নির্মাণ চলছে বিশেষ এক মেগা প্রকল্প। স্থাপন করা হচ্ছে একের পর এক আয় বর্ধক জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। অবহেলিত এ জনপদের স্বপ্ন এখন অনেকটাই দৃশ্যমান। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে জাতীয় অর্থণীতিতে এশিয়ার মধ্যে প্রধান বানিজ্যস্থল হবে এই এলাকা। এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ার রামনাবাদ নদীর তীরে দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রার নাম ফলক উদ্বোধন করেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে ২০১৬ সালের ১৩ আগষ্ট এক ভিডিও কন্ফারেন্সে আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করেন তিনি। দেশের একমাত্র গভীর বন্দরটি চালুর পর ভাগ্য পাল্টাচ্ছে এলাকাবাসীর। এরপর শুরু হয় ১৩ শত ২০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন কয়লা ভিত্তিক পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র, উচ্চ গতির সাবমেরিন ক্যাবল ষ্টেশন, জাতীয় নিরাপত্তা ও সামাজিক উন্নয়নে দেশের প্রধান সেনা ঘাটি শেখ হাসিনা সেনানিবাস, পর্যটন শিল্প বিকাশে পটুয়াখালীর-কুয়াকাটা মহা-সড়কে ৩টি সেতু নির্মাণ দৃশ্যমান।
এছাড়া ঢাকা থেকে পায়রা সমুদ্র বন্দর হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত ২ শত ৪০ কিলোমিটার রেল যোগাযোগ। শেখ হাসিনা অত্যাধুনিক ৪ লেন সড়ক, পটুয়াখালীর প্রবেশদ্বার লেবুখালীতে দৃষ্টিনন্দন পায়রা সেতু, কুয়াকাটাকে একটি অত্যাধুনিক পর্যটন নগরীর মহা-পরিকল্পনার ফাইল সচল হয়েছে। ধাপে ধাপে বরাদ্ধ হচ্ছে বড় অংকের টাকা। স্থাপন হবে মৎস্য প্রকৃয়াজাত শিল্প, তেলশোধনাগার, জাহাজ তৈরী কারখানা, প্রধান নৌ-বাহিনী ঘাটি ওষুধ ও পোশাক শিল্পসহ ১ শত ২৫ মেগা প্রকল্প।
স্থানীয়রা জানান, অবহেলিত এ অঞ্চলে এসব প্রকল্প স্থাপন হওয়ায় তারা কাজের সুযোগ পেয়েছেন। এতে তাদের মাঝে বইছে খুশীর জোয়ার। এ জন্য বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চীর কৃতজ্ঞ তারা।
উন্নত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় আগের তুলনায় দেশী-বিদেশী ভ্রমন পিপাসুর পদভারে মুখোরিত এখন সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা। তারা বলছেন যার অপরূপ সৌন্দর্য সূর্য্যােদয় আর সুর্যাস্তের বিরল দৃশ্য এবং দৃষ্টি নন্দন স্থাপনা উপভোগ করতে পেরে আনন্দে মাতয়ারা।
বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, ব্যাবসায়ী ও পিএইচডি গবেষক রাষ্ট্রীয় স্বর্ণপদক প্রাপ্ত দেশ সেরা দুমকি উপজেলা পরিষদ প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এডভোকেট হারুন-অর-রশীদ হাওলাদার জানান, বর্তমান ডিজিটাল যুগে একটি আধুনিক সমুদ্র বন্দর স্থাপনে যা দরকার তা সবই হচ্ছে এখানে। বন্দরটি ঘিরে গড়ে উঠবে একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক জোন। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা যা বলেন তা বাস্তবায়ন করেন বলেও জানান তিনি।
নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহামুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, ২০২৩ সালের মধ্যে এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় এই পায়রা সমুদ্রটি পূর্নাঙ্গভাবে চালু হবে। আর এটি চালু হলে জাতীয় অর্থণীতিতে যোগ হবে এক নতুন মাত্রা। আরো বলেন সব অবকাঠামো নির্মাণ হলে সিঙ্গাপুরের আদলে বিশেষ এক অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে গড়ে উঠবে এই এলাকাটি।