মনোহরদী প্রতিনিধি
ছেলে ছাগল চুরির অভিযোগে পিতাকে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। মনোহরদী থানার খিদিরপুর ইউনিয়নের পাড়াতলা এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তির নাম আঙ্গুর মিয়া (৫০)। তিনি পাড়াতলা এলাকার আওয়াল নবীর ছেলে। পরিবারের অভিযোগ, আঙ্গুর মিয়াকে চেয়ারম্যানের ১০-১৫ জন লোক গত মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে বাড়ী থেকে ধরে সিএনজিতে তুলে নিয়ে আসে ওই এলাকার ইউপি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এবং তাকে আটকে রেখে দিনভর নির্যাতন করারও অভিযোগ করা হয়। তাকে ছাড়িয়ে নিতে চেয়ারম্যান ১ লক্ষ টাকাও দাবি করেন।
ভুক্তভোগীর স্ত্রী রিমা আক্তার বলেন, “আমার ছেলে সাদেকুল ইসলাম (২৩) নাকি ছাগল চুরি করেছে” এমন মিথ্যা অভিযোগে ছেলেকে বাসায় না পেয়ে সকাল ৮টার দিকে পাড়াতলার বাড়ী থেকে চেয়ারম্যানের লোকজন স্বামীকে ধরে নিয়ে এসে তার কার্যালয়ে আটকে রেখে নির্যাতন করেছে। আমি রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে আমার স্বামীকে ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করেছি কিন্তু আমার অনুরোধ রাখেনি। উল্টো চেয়ারম্যান ১ লক্ষ টাকা দাবি করে। চেয়ারম্যানকে টাকা না দেয়া হলে তারা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিবে। পরে আমার বাড়ির আশে-পাশের লোকজন আমার স্বামীকে ছাড়াতে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এসে জড়ো হতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে আমাদের ওয়ার্ড সদস্যর মধ্যস্থতায় রাত ১টার দিকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে আমার স্বামীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মারধর করায় আমার স্বামী শারীরিক ও মানষিক ভাবে বিপর্যস্ত। তিনি এখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলে অপরাধের সাথে জড়িত থাকলে সাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে তার বিচার করা হোক। কিন্তু আমার নিরপরাধ স্বামীকে এভাবে ধরে এনে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মারপিট করায় আমার মানসম্মানের হানি হয়েছে। আমি এই চেয়ারম্যানের বিচার চাই।’
খিদিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ কাউছার রশিদ বিপ্লব বলেন, আঙ্গুর মিয়ার ছেলে সাকিব এর আগে এলাকা থেকে প্রায় ১০০ গরু-ছাগল চুরি করেছেন। ছাগল চুরির সহযোগী মাহমুদুল হাসান (১৬) কেও আমরা আটক করেছি। মাহমুদুল স্থানীয় একটি স্কুলের এস এস সি পরিক্ষার্থী। সে এখন আমার কার্যালয়ে রয়েছে। সকালে আটক করার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, আঙ্গুরের ছেলেকে বাড়ীতে না পেয়ে আজ বিকাল ৫টার দিকে লোকজন তাকে ধরে নিয়ে এসেছে। ছেলেকে বাড়ী থেকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করায় বাবাকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতেই তাকে ছেড়েও দেয়া হয়েছে। তাকে মারধর করা হয় নি এবং টাকাও দাবি করা হয় নি। পরিবারের এসব দাবি ভিত্তিহীন মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ ফরিদ উদ্দিন বলেন, খিদিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমাকে সন্ধ্যায় কল করে জানিয়েছেন যে, ওই পাড়াতলা গ্রাম থেকে ছাগল চুরির অভিযোগে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চল হওয়ায় আমরা তখনই ঘটনাস্থলে যেতে পারি নি। আর ছেলেকে না পেয়ে পিতাকে আটক করার কথা জানি না। খোঁজ খবর নিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।