আব্বাস উদ্দিন ইকবাল : চট্টগ্রামের পটিয়া, আনোয়ারা, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও কক্সবাজার মহাসড়কসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের কয়েকটি উপজেলার যাত্রীদের কাছ থেকে কয়েকগুণ ভাড়া আদায় করা হলেও নেয়া হচ্ছে না কোনো ব্যবস্থা। সপ্তাহে শনিবার, রোববার ও বৃহস্পতিবার এ ৩ দিন দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে গাড়ির চালক ও হেলপাররা। ভাড়া নিয়ে প্রতিনিয়ত যাত্রীদের সঙ্গে গাড়ির চালক, হেলপারদের মারামারির ঘটনাও ঘটে।
জানা যায়, দক্ষিণ চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক হয়ে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার যাত্রী যাতায়াত করে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম নগরীর শাহ আমানত সেতু (নতুন ব্রিজ) এলাকা থেকে ছোট-বড় বাস, সিএনজি, অটোরিকশাসহ হাজারো যানবাহন চলাচল করে এ সড়ক দিয়ে। চট্টগ্রাম নগরী থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রবেশপথ কর্ণফুলী, আনোয়ারা, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, বাঁশখালী ও কক্সবাজার জেলার চকরিয়া পেকুয়া উপজেলার যাত্রীদের চলাচল হয়ে থাকে বেশি। এছাড়াও পার্বত্য জেলা বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার যাত্রীরাও চলাচল করে। সব মিলিয়ে প্রতিদিন লাখের অধিক যাত্রী এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে। তবে সড়কের আনোয়ারা, পটিয়া, চন্দনাইশ, বাঁশখালী, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলার যাত্রীদের হয়রানির শিকার হতে হয় সবচেয়ে বেশি। সপ্তাহে বৃহস্পতিবার আসলে শাহ আমানত সেতু থেকে আনোয়ারা, পটিয়া, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ার যাত্রীদের দ্বিগুণ ভাড়া নেয়। আবার এসব উপজেলার যাত্রীদের কাছ থেকে শনিবার, রোববার আসলে চট্টগ্রাম শহরে যাওয়ার পথে একইভাবে ভাড়া আদায় করে গাড়ির চালক ও হেলপাররা।
যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসনকে বারবার বলা হলেও নেয়া হয় না কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা। মাঝেমধ্যে লোক দেখানো অভিযান চালিয়ে পরে চলে যায়। বর্ধিত ভাড়া নিশ্চিত করতে নেয়া হয় না প্রশাসনিক ব্যবস্থা।
যাত্রীরা জানায়, সকলকে ম্যানেজ করেই গাড়ির চালক ও হেলপাররা বাড়তি ভাড়া আদায় করে। আর এতে তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করে মালিক সমিতির নেতারা।
যাত্রীরা আরও বলেন, বৃহস্পতিবার আসলেই শাহ আমানত সেতু (নতুন ব্রিজ) থেকে আনোয়ারা বরকল বরমাগামী বাসগুলো ১৫-২০ টাকার ভাড়ায় ৫০-৮০ টাকা নেয়। পটিয়াগামী যাত্রীদের কাছ থেকে ৫০-৮০ টাকা পর্যন্ত নেয়। চন্দনাইশের যাত্রীদের কাছ থেকে ৬০-১০০ টাকা, বাঁশখালীগামী যাত্রীদের কাছ থেকে ১০০-১৫০ টাকা, সাতকানিয়াগামী যাত্রীদের কাছ থেকে ৮০-১২০ টাকা এবং লোহাগাড়া উপজেলার যাত্রীদের কাছ থেকে ১০০-১৫০ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে। বাড়তি ভাড়া আদায় করতে গাড়ির চালকরা রাত ৮টার পর গাড়ি বন্ধ করে দিয়ে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে ভাড়া আদায় করে।
নগরী থেকে আনোয়ারা সড়কের নিয়মিত যাত্রীরা জানান, বাড়তি ভাড়া নৈরাজ্য এটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। প্রশাসন চাইলেই বাড়তি ভাড়া নৈরাজ্যটি সমাধান করতে পারে। প্রায় সময় যাত্রীদের সাথে গাড়ির চালক ও হেলপারদের সাথে কথা কাটাকাটি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় যাত্রীদেরও বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়।
এ ব্যাপারে মালিক সমিতির নেতাদের কাছ থেকে জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা বাড়তি ভাড়া বিষয়ে আমাদের শ্রমিকদের বলে দিয়েছি যাতে কোন বাড়তি ভাড়া আদায় করা না হয়, হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া যারা বৃহস্পতিবারসহ অন্যান্য সময়ে বাড়তি ভাড়া নেয় তারা আমাদের সংগঠনের কেউ নয়, তারা বাইরের শ্রমিক।