ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়ায় অটোরিক্সা চালক রিফাত হত্যার ঘটনার রহস্য উদঘাটিত হয়েছে ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার শহরের হাজীপাড়াস্থ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কার্যালয়ে এবিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে পিবিআই।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঠাকুরগাঁও পিবিআই-এর পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিরস্ত্র) মো. রবিউল ইসলাম ও পিবিআই’র এসআই জাহাঙ্গীর আলমসহ পিবিআই’র অন্যান্য কর্মকর্তা এবং জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
বক্তব্যে পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ জানান, গত ১৬ অক্টোবর রিফাত বাড়ি থেকে তার অটোরিক্সা নিয়ে বের হন। দুপুরে তিনি বাসায় খাবার জন্য না আসায় তার স্ত্রী আশা মনি সন্ধ্যায় তাকে ফোন করলে রিফাত জানান, তিনি ২ জন যাত্রী নিয়ে রুহিয়ার দিকে যাচ্ছেন। অনেক রাত অবধি তার কোন সন্ধান না পেয়ে স্ত্রী আশা মনি পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনকে বিষয়টি জানালে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন ১৭ অক্টোবর রুহিয়া থানার ঘুরনগাঁছ কুজিশহর গ্রামের চারপুকুরি এলাকায় মন্ডলাদামগামী রাস্তার পাশে বাঁশ ঝাঁড়ে থেকে রিফাতের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে তার স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজন মরদেহটি রিফাতের বলে সনাক্ত করেন।
পুলিশ সুপার জানান, বিষয়টি জানার পর ঠাকুরগাঁও পিবিআই স্ব-উদ্যোগে রিফাতের মামলাটি তদন্তের জন্য অধিগ্রহণ করে। পিবিআই টিম মামলার ছায়াতদন্তের এক পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এ ঘটনায় জড়িত ৭ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, পঞ্চগড় সদর উপজেলার জিয়াবাড়ী সর্দারপাড়া গ্রামের মো. হালিম উদ্দিনের ছেলে মো. রবিউল ইসলাম (১৬), একই উপজেলার ভুতমারী গ্রামের মৃত আশরাফ চৌধুরীর ছেলে কামরুল হাসান (২৪), আটোয়ারী উপজেলার ছোট গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত চৈতন্যের ছেলে এরাজ ওরফে এরাজ উদ্দিন (৬২), তার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩২), আলমগীর হোসেন (২৫), রুহিয়া থানার ঘনিমহেষপুর গ্রামের কাশি বর্ম্মনের ছেলে অতুল বর্ম্মন (৩২) ও আটোয়ারী উপজেলার দেলুয়া দারখোর গ্রামের মো. আজিজুল ইসলামের ছেলে মো. নাছির উদ্দিন (৩৫)। পিবিআই টিম কামরুলের কাছ থেকে রিফাতের মোবাইল ফোন ও আসামী নাসির উদ্দিনের ঘরের ভেতর থেকে রিফাতের অটোরিক্সার বিভিন্ন অংশ করা করে। পরবতীতে আসামী কামরুল, রবিউল, অতুল বর্ম্মন, নাছির উদ্দিন ঘটনার সাথে জাড়িত থাকার বিষয়ে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। রিফাতের অটোরিক্সাটির জন্য এই হত্যাকাণ্ড বলে গ্রেফতারকৃতরা জানায়। মঙ্গলবার গ্রেফতারকৃত ৭ জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ অক্টোবর সদর উপজেলার রুহিয়া থানার ঘুরনগাঁছ কুজিশহর গ্রামের চারপুকুরি হতে মন্ডলাদামগামী রাস্তার পাশে বাঁশ ঝাঁড় থেকে রিফাতের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মামলাটি ক্ললেস থাকায় পিবিআই স্ব-উদ্যোগে মামলার তদন্তের দায়িত্ব গ্রহণ করে।