রাজস্থলী (রাঙ্গামাটি) সংবাদদাতা : রাঙ্গামাটি জেলাধীন রাজস্থলী উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে। চারটি পূজামন্ডপের প্রতিমাগুলো পুকুরে ও কর্ণফুলী নদীতে বিসর্জনের মাধ্যমে বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শারদীয় দূূর্গোৎসব শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার ছিল বলে জানান পূজামন্ডপ পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, রাজস্থলী হরি মন্দির, বাঙ্গালহালীয়া দক্ষিণাশ্বর কালী মন্দির, ছাগল খাইয়া কৃষ্ণ মন্দির ও কুতুরিয়া পাড়া শিব মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় দূর্গোৎসব। রাজস্থলী উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব ও বাঙ্গালহালিয়া দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুমন দে বলেন, এই বছর পূজামন্ডপে নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি মুহূর্তে খোঁজখবর নিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। বাঙ্গালহালিয়া দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরের পূজামন্ডপে ব্যয়বহুল আয়োজন থিম প্রদর্শনীর আয়োজন করা দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির পূজামন্ডপে পূজা চলাকালীন সময়ে রাঙ্গুনিয়া, রাইখালী থেকে দৈনিক শত শত দর্শনার্থীদের ভীড়ে মিলনমেলায় পরিণত হয় পূজামন্ডপ। রাজস্থলী উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক মিঠুন চন্দ্র দে বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় এই বছরে পূজামন্ডপগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তদারকি ছিলো চোখে পড়ার মত। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দূর্গোৎসব সম্পন্ন হওয়ায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
এদিকে রাজস্থলী উপজেলার চারটি পূজামন্ডপের মধ্যে একটি রাজস্থলী থানার অধীনে অপর তিনটি চন্দ্রঘোনা থানার অধীনে রয়েছে।
রাজস্থলী থানার ওসি জাকির হোসেন ও চন্দঘোনা থানার ওসি শফিউল আজম বাবু বলেন, পূজামন্ডপগুলোতে অসংখ্য দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে শারদীয় দূর্গোৎসব প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শান্তনু কুমার দাশ জানান, সরকারের আদেশ অনুসারে পূজামন্ডপগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সকলের সার্বিক সহযোগিতায় উপজেলায় চারটি পূজামন্ডপে শারদীয় দূর্গোৎসব ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উবাচ মারমা বলেন, জননেতা দীপঙ্কর তালুকদার এমপির দিকনির্দেশনায় প্রতিটি পূজামন্ডপে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সার্বক্ষণিক তদারকিতে ছিলো এবং পূজামন্ডপগুলো পরিদর্শনে গেলে ব্যাপক দর্শনার্থীদের উপস্থিতি দেখে খুবই আনন্দ পেয়েছি।
এদিকে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য নিউচিং মারমা বলেন, জননেতা দীপঙ্কর তালুকদার এমপি ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরীর দিকনির্দেশনায় প্রতিটি পূজামন্ডপ পরিদর্শনকালে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়। সরকারিভাবে পূজামন্ডপগুলোতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রতিটি পূজামন্ডপে ৫শত কেজি করে চারটিতে দুই মেট্রিক টন চাউল বরাদ্দ হয়েছে। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ থেকে প্রতিটি পূজামন্ডপে দেড় মেট্রিক টন করে ছয় মেট্রিক টন চাউল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। নবমীর দিন রাতে রাজস্থলী হরি মন্দিরে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য নিউচিং মারমা। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন রাজস্থলী সার্কেল এএসপি সাইফুল ইসলাম, ওসি জাকির হোসেন, ইউপি চেয়ারম্যান রবার্ট ত্রিপুরা, মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি দিলীপ দাস, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক মিঠুন চন্দ্র দে, ইউপি সদস্য জয়নুল আবেদীন তালুকদার, উদয় চন্দ্র তংচঞ্চ্যা প্রমুখ। মন্দিরে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে একটি হারমোনিয়াম বিতরণ করা হয়েছে।