দীপক কুমার সরকার,বগুড়া প্রতিনিধি:
পহেলা জানুয়ারী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে জুতা পায়ে শহীদ মিনারে উঠতে শুরু করে স্থানীয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল কর্মীরা হামলা চালিয়ে পাঁচ পুলিশ সদস্যকে আহত করে। আহত পাঁচ পুলিশ সদস্যের একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং অন্য সদস্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ঘটনায় ১১ ছাত্রদল কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ১ জানুয়ারী বুধবার সকাল থেকে বগুড়া শহরের শহীদ খোকন পার্কের অভ্যন্তরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সমবেত হতে থাকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এরই এক পর্যায়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রদলের অসংখ্য নেতাকর্মীরা তাদের জুতা পায়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে উঠে শ্লোগান দিতে থাকে এবং মোবাইল ফোনে সেলফি তোলায় ব্যস্ত হন। এ সময় সেখানে কর্তব্যরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর-সার্কেল) সনাতন চক্রবর্তীসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্য তাদের জুতা পায়ে শহীদ মিনারের বেদিতে উঠতে নিষেধ করেন। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের একটি অংশ বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে পেছন থেকে লাঠি হাতে বিক্ষুব্ধদের একটি অংশ পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তাদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডের লাঠি ও ইটপাটকেল দিয়ে পুলিশ সদস্যদের আঘাত করা হয়। এতে ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী, এ এস আই আশরাফুল ইসলাম, কনস্টেবল পারভেজসহ পাঁচজন আহত হন। তাদের মধ্যে কনস্টেবল পারভেজকে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী সাংবাদিকদের বলেন, শহীদ মিনারে জুতা পায়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উঠে শ্লোগান দিচ্ছিলেন। এ সময় তাদের নিষেধ করলে হঠাৎ পুলিশের ওপর হামলা করেন। এতে আমিসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন। আহত পুলিশ সদস্য পারভেজ বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্যান্য পুলিশ সদস্য প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা। বগুড়া জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবু হাসান ও সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম সিদ্দিকী রিগ্যান জানান, তাদের সমাবেশ মঞ্চ ছিল নবাববাড়ি সড়কের দলীয় কার্যালয়ের সামনে। সেখানে তারা অবস্থান করছিলেন। নেতাকর্মীরা শহীদ মিনারে জড়ো হয়েছিলেন মাত্র। সেখানে বাধা প্রদান করায় পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের কথাকাটাকাটি হয়। তবে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি বলে জানায় ওই ছাত্রনেতা।
এ প্রসঙ্গে বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(সার্বিক) এস এম বদিউজ্জামান বলেন, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রদলের ১১ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতার সংখ্যা বাড়তে পারে বলে তিনি জানান।