নিজস্ব প্রতিবেদক
নৌযান শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরী ২০ হাজার টাকা নির্ধারণসহ ১০ দফা দাবীতে হঠাৎ দেয়া ধর্মঘটে দূর্ভোগে পড়েছেন মুন্সীগঞ্জের লঞ্চযাত্রীরা। স্থানীয়ভাবে কোন ধরণের পূর্ব ঘোষণা না দেয়া কিংবা সংগঠনের পক্ষ থেকে মাইকিং না করায় যাত্রীরা ঘাটে এসে চরম দূর্ভোগে পড়েছে। গতকাল রবিবার সকাল থেকে মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম লঞ্চঘাট-ঢাকাসহ সব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা।
লঞ্চ সুকানীরা বলেন, গত শনিবার দিবাগত রাত ১২টার পর পর্যন্ত সিডিউলের সবগুলো লঞ্চ ছেড়ে গেছে। সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে। লঞ্চ মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে। তাদের মধ্যে সুরাহা হলে আবার লঞ্চ চলাচল শুরু করবে বলে জানতে পেরেছি। মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে গিয়ে কোন লঞ্চ পাওয়া গেলেও লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। মিরকাদিম লঞ্চ ঘাটে যাত্রীবহনকারী কিছু অটোরিকশা ঘাটে অবস্থান করতে দেখা যায়। যেসব যাত্রী শ্রমিক ধর্মঘটের বিষয়ে জানেন না, তারা ঘাটে এসে উপস্থিত হচ্ছেন।
মিরকাদিম লঞ্চ ঘাটের শ্রমিক পাভেল জানান, আমাদের যে দাবি দাওয়া ছিল, ২০২২ সাল চলে যাচ্ছে কিন্তু মালিকপক্ষ ও শ্রম মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমাদের বেতন বৃদ্ধিসহ ১০ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই ধর্মঘট চলবে।
শরিয়তপুরের নড়িয়া থেকে বিকালে আসা মিজান জানান, লঞ্চ ধর্মঘটের বিষয়ে জানি না। যে কারণে বাড়ী থেকে টাকা খরচ করে ঘাটে এসেছি। সড়কপথে এখন সন্তানদের নিয়ে যাওয়াও সম্ভব নয়। দুপুরের লঞ্চে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘাটে এসে দেখেন ঘাটে লঞ্চ আছে কিন্তু ছেড়ে যাওয়ার কোন নির্দেশনা নেই। এরপর অপেক্ষা করে চলে যান। তিনি বলেন, শহরে থেকেও লঞ্চ ধর্মঘটের কথা জানতে পারিনি।
সদরের লঞ্চযাত্রী শাকিল জানান, বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে বারবার লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধি করেছে। তার দায়ভারও যাত্রীদের নিতে হয়েছে। এখন লঞ্চ শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে বিরোধ চলছে। তার দায়ভার কি আমাদের নিতে হবে? আমরা দূর-দূরান্ত থেকে লঞ্চঘাটে এসেছি, এসে দেখি লঞ্চ চলাচল বন্ধ। আমরা যে দূর্ভোগে পড়েছি তার দায়ভার নিবে কে? আশা করি সরকারের হস্তক্ষেপে মালিক তাদের দাবি দাওয়া পূরণ করে দ্রুত লঞ্চ চলাচল শুরু করবে।
মুন্সীগঞ্জ লঞ্চ ঘাটের ইজারাদার দিল মোহাম্মদ বলেন, সারাদেশে লঞ্চ বন্ধ থাকায় আমাদের এখানেও লঞ্চ বন্ধ রয়েছে। নির্দেশনা পেলে লঞ্চ চলাচল আবারো শুরু হবে। লঞ্চ বন্ধ থাকায় দূর্ভোগে পড়েছে লঞ্চযাত্রীরা।