নিজস্ব প্রতিবেদক
শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে মধ্যরাতে দিনের বেলায় ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা ফলে এ নৌরুটের যাত্রীরা পড়েছে চরম দুর্ভোগে। গতকাল শনিবার সকাল থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে দিনের বেলায় ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)। জানানো হয়, শুধু রাতের বেলায় পণ্যবাহী পরিবহন পারাপারের জন্য ফেরি চলাচল করবে। সকাল থেকে কোনপ্রকার যানবাহন ঘাট এলাকায় যেতে দিচ্ছেনা। যাত্রীরা বলেন, রাজধানী ঢাকা থেকে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে ঘাট এলাকায় এসে ফেরি বন্ধ থাকায় মহাবিপদে পড়লাম। তবে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণার পরও মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে আসতে দেখা গেছে যাত্রীদের। তবে পুলিশের কঠোর অবস্থানের কারণে শিমুলিয়া ঘাটের প্রবেশ মুখ থেকে তাদের ফিরে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে। যাত্রীরা জানান, মাঝরাতের এ ঘোষণা তাদের অনেকেই জানেন না। হঠাৎ করে ঘাটে এসে দেখেন ফেরি বন্ধ আর পুলিশ তাদের ঘাট এলাকা থেকে বের করে দিচ্ছে। এ অবস্থায় হাজারো যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে গতকাল শনিবার সকালে শিমুলিয়া ঘাট থেকে মোট ৩টি ফেরি ছাড়তে বাধ্য হয় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)। এদিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে, মাওয়া চৌরাস্তা ও শিমুলিয়া ঘাটের প্রবেশমুখে পুলিশের টহল দল চৌকি দেখা গেছে। এসব টহল চৌকি থেকে দক্ষিণ বঙ্গগামী যাত্রীদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ঘাটের প্রবেশপথগুলোতে গাড়ি আটকে দেওয়ায় চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁেটই শত শত মানুষ শিমুলিয়া ঘাটে আসে। ঘাট কর্তৃপক্ষ জানান, কীভাবে জরুরী সেবা দেওয়া যায় তা ভাবা হচ্ছে। আ্যাম্বুলেন্স পারপারের মতো জরুরী সেবা দেওয়া যায় সে বিষয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।
শিমুলিয়া ফেরি ঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) হিলাল উদ্দিন বলেন, শিমুলিয়া ঘাটের এক কিলোমিটার দূর থেকে যাত্রীদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কোন যাত্রীকে শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এতদিন লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ ছিল। গতকাল শনিবার থেকে দিনের বেলা ফেরি চলাচল বন্ধ। ফলে কোনভাবেই নদী পার হতে পারবেন না কেউ। যাত্রীদের ঘাট এলাকায় ভিড় না করতে অনুরোধ করেন তিনি। এদিকে অনেক যাত্রীকে নদী পার হতে না পেরে বিকল্প পথ খুঁজতে দেখা গেছে। আবার কেউ কেউ নদী পার হতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। হঠাৎ ফেরি বন্ধে ভোগান্তিতে পড়েছেন এ রুটের যাত্রীরা। কেউ কেউ আবার ঘাট এলাকায় অপেক্ষা করছেন। মাঝরাতে ফেরি বন্ধের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে দুর্ভোগে থাকা ঘাটে অবস্থান করা যাত্রীরা। শিমুলিয়া ঘাটে অপেক্ষায় থাকা শিবচরগামী জহিরুল ইসলাম (৪০) নামে এক ঈদযাত্রী বলেন, মাঝরাতে ফেরি বন্ধের সিদ্ধান্ত আমরা জানি না। যদি আগে থেকে জানতাম তাহলে এখানে আসতাম না। এ অবস্থায় শিমুলিয়া ঘাটে আসা দুর্ভোগে থাকা যাত্রীদের রাজধানীর দিকে ছুটতে দেখা গেছে ।
বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শাফায়াত আহমেদ জানান, শেষ রাত থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন তারা। তবে সন্ধ্যার পর কয়টি ফেরি দিয়ে সার্ভিস চালু রাখা হবে এ ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত তিনি কিছু জানেন না বলে জানান। তিনি আরো জানান, পরবর্তী নির্দেশ আসলে ফেরি চালানোর সময় বদলে যেতে পারে।