মোঃ গোলাম কিবরিয়া, জামালপুর প্রতিনিধি
অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। গত তিন দিনের ব্যবধানে যমুনাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ পর্যন্ত উপজেলার নিম্নাঞ্চলের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। পাশাপাশি বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে চরম ভোগান্তিতে আছে পানিবন্দী মানুষ। বন্যায় সরিষাবাড়ী উপজেলার ৪৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং কলেজ ও মাদ্রাসাসহ আরও ২১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়া উপজেলার পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়নের প্রায় ৪৫টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় বানভাসী অনেক মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। অপরদিকে সরকারী বেসরকারী অফিসগুলোতে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় ব্যাহত হচ্ছে তাদের কার্যক্রম। বিশেষ করে হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস, খাদ্য গুদাম, সমাজসেবা অফিস, প্রধান ডাকঘর, জুটমিলসহ বিভিন্ন অফিসে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় তারা নাজুক অবস্থার মধ্যে পড়েছে। এদিকে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা পড়েছে বিপাকে। এছাড়া সরিষাবাড়ী বাসষ্ট্যান্ড, রেল ষ্টেশনসহ রেললাইন, বাসষ্ট্যান্ড, আরামনগর বাজার, শিমলা বাজার, বাউসী বাজারসহ প্রধান সড়ক বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। ফলে সরিষাবাড়ীর সাথে বিভিন্ন এলাকার যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। গৃহপালিত পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন গৃহস্থ ও খামারীরা। বিভিন্ন এলাকার রোপা আমন ধানের বীজতলা ও সবজি বাগান পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। জানা গেছে, বন্যার পানিতে উপজেলার ৮০০ হেক্টর ফসলসহ বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বাড়িতে পানি উঠায় চুলা জ্বালাতে পারছেন না প্লাবিত এলাকার মানুষ- রয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। শুকনো খাবার খেয়েই দিন পার করছেন তারা। এদিকে ঝালুপাড়া ঘাট এলাকায় ঝিনাই নদীর ওপর নির্মিত সেতুটিতে এলাকাবাসী ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। সেতুর উপর দিয়ে একটি সিএনজি বা অটোরিক্সা গেলেও সেতুটি কেঁপে উঠে। হুমকির মুখে রয়েছে পোগলদিঘা বেড়িবাঁধ। ইতিমধ্যে বন্যার্তদের জন্য সরকারীভাবে ২০২ টন চাল ও নগদ ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।