মোঃ আকছেদ আলী, পাবনা প্রতিনিধি
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় মিনা খাতুন নামের এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকালে উজেলার মুন্ডুতোষ গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ওই গৃহবধু মুন্ডুতোষ গ্রামের আব্দুল খালেকের প্রথম স্ত্রী। সকাল ৯টার দিকে নিজ বাড়ীর রান্নাঘরে ডাবের সাথে গলায় দড়ি পেঁচানো অবস্থায় তার পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে। তার তিনজন নাবালক পুত্র সন্তান রয়েছে। গ্রামবাসীর সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১৫ বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে চাচাতো বোন মিনা খাতুনকে বিয়ে করেন তার চাচাতো ভাই আব্দুল খালেক। বিয়ের পর থেকেই চাচা মোন্তাজ আলীর অর্থাৎ মিনার পিতার সমস্ত সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিতে চায় আব্দুল খালেক। মিনার বাবা কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন তারপরও মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে তার ১২ বিঘা জমি একমাত্র মেয়ে মিনার নামে দানপত্র রেজিষ্ট্রি করে দেন। এতে আব্দুল খালেক আরও রাগান্বিত হয় এবং মিনাকে আবার ওই জমি তার নামে লিখে দিতে বলে। এতে মিনা রাজি না হওয়ায় প্রায়ই স্বামী আব্দুল খালেক নির্যাতন করতো। তার নামে জমি লিখে না দিলে পরে আব্দুল খালেক দ্বিতীয় বিবাহ করে তাকে নিয়ে ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে একটি গার্মেন্টসে চাকুরী করেন। তিনি মাঝেমধ্যে গ্রাম আসেন। তবে মিনার সাথে তার সুসম্পর্ক ছিল না। মিনার দেবর সালীন হোসেন ও বড় ভাবী মিনাকে অত্যাচার করতো। সম্প্রতি আব্দুল খালেক মিনাকে মারধর করে তার একটা হাত ভেঙ্গে দিয়েছিল। এছাড়া সালীন হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা আব্দুল খালেকের পক্ষ নিয়ে মিনার সাথে প্রায়ই দুর্ব্যবহার করতো। মুন্ডুতোষ গ্রামের আব্দুল আলিম ও জয় হোসেন জানান, মানসিক যন্ত্রনা ও নির্যাতনের কারণেই মিনার মৃত্যু হয়েছে। তারা আরও বলেন, বলা হচ্ছে রান্নাঘরের ডাবের সাথে মিনাকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে কিন্তু এই ডাব থেকে মেঝের দূরত্ব এতো বেশী নয় যে সেখানে ঝুলে আত্মহত্যা করা যায়। এই মৃত্যুর পিছনে রহস্য রয়েছে বলে তারা দাবী করেন। নিহত মিনার মামা সাহেব আলীও একই মত পোষন করে বলেন, তার ভাগ্নীর আত্মহত্যার কোন কারণ নেই, তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। ভাঙ্গুড়া থানার ডিউটি অফিসার এ.এস.আই মোঃ মাসুদ রানা বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাবনা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর বলা যাবে- হত্যা না আত্মহত্যা। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা রেকর্ড করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।