নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন- বিএনপি-জামাত অশুভ জোটের পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা ও ২০০৫ সালের ১৭ আগস্টের সিরিজ বোমা হামলার মতো নৃশংস সন্ত্রাসের অন্ধকার অধ্যায়ে আর ফিরে যাবে না বাংলাদেশ। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের আখরে রচিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে নতুন প্রজন্ম দৃঢ় কঠিন মনোবল নিয়ে দেশকে এগিয়ে নেবে। গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড দন্ডিত ও পলাতক আসামী তারেক রহমানের মতো সন্ত্রাসবাদী রাজনীতিককে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে নতুন প্রজন্ম। তাই সে সাত সাগর তের নদীর পাড়ে বসে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লাগাতার ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। দেশের মাটি ও মানুষের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলার কালো দিন স্মরণে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে এ কথা বলেন তিনি। মুন্সীগঞ্জ শহরের কালীবাড়িস্থ সংসদ সদস্যের সভাকক্ষে জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক মোর্শেদা আক্তার লিপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মুন্সীগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহতাব উদ্দিন কল্লোল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আল মাহমুদ বাবু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা তপন, মিরকাদিম পৌরসভার প্যানেল মেয়র আব্দুর রহিম বাদশা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাহবুর রশিদ সবুজ, মুন্সীগঞ্জ শিল্পাঞ্চল আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের সভাপতি আবুল কাশেম, জেলা পরিষদ সদস্য গোলাম রসুল সিরাজী রোমান, কাউন্সিলর আক্তার হোসেন চৌধুরী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম পলাশ প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, বিএনপি-জামাত অশুভ জোট আমলে সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশ। তৎকালীন সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের পৃষ্ঠপোষকতায় সৃষ্ট সশস্ত্র জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের হামলায় রক্তাক্ত জনপদে পরিণত হয়েছিল আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও আওয়ামীলীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সহ আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে হত্যার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে সংঘটিত পরিকল্পিতভাবে নৃশংস গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। তার এক বছর পর ২০০৫ সালে দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা হামলা চালায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ‘জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ’ (জেএমবি)। ১৭ আগস্ট দেশের ৩০০ স্থানে মাত্র আধাঘণ্টার ব্যবধানে একযোগে ৫০০ বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় দু’জন নিহত ও দুই শতাধিক লোক আহত হয়। হামলা চালানো হয় হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট, জেলা আদালত, বিমানবন্দর, বাংলাদেশে থাকা মার্কিন দূতাবাস, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, প্রেসক্লাব ও সরকারি-আধাসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা লক্ষ্য করে। হামলার স্থানগুলোতে জেএমবির লিফলেট পাওয়া যায়। বোমা বিস্ফোরণে নিহত মানুষের স্বজনদের আর্তনাদ ও আহত মানুষের কান্না-আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে দেশ।
তিনি বলেন, তখনকার বিএনপি-জামাত অশুভ জোট সরকার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মতো নৃশংস ও বর্বর হামলার মধ্য দিয়ে হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল।
বিএনপি-জামাত শাসনামলে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কূটনীতিক অর্থনীতিবিদ শাহ এ এম এস কিবরিয়া যখন এই খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি’র লেলিয়ে দেওয়া পাষন্ডদের দ্বারা কাপুরুষোচিত গ্রেনেড হামলার শিকার হয়েছিলেন, তখন তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসার জন্য একটি হেলিকপ্টার চেয়েও তার কাছ থেকে কোনো ধরনের সাড়া পাওয়া যায়নি। শ্রমিক নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টার, জনগণের নন্দিত নেতা মমতাজ উদ্দিন, অজাতশত্রু মানুষ মঞ্জুরুল ইমামসহ হাজার হাজার গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল মানুষকে হত্যা করেছেন। শিশু-কিশোরী পূর্ণিমা, ফাহিমা, রজুফা সহ হাজার হাজার ধর্ষিতার কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। ভোলার লালমোহন-তজুমদ্দিন, বরিশালের গৌরনদী, ময়মনসিংহের গফরগাঁও, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রামের বাঁশখালী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকাকে মৃত্যুপুরী বিভীষিকা ও রক্তাক্ত জনপদে পরিণত করেছিল তারা। বাংলা ভাই ও মুফতি হান্নান, আব্দুর রহমানসহ জঙ্গি নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে প্রগতিশীল মানুষের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছিল।