নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) প্রতিনিধি : কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামীলীগ প্রায় ১ বছরে ৩ দফা কমিটি পরিবর্তন করা হয়েছে। এ নিয়ে নতুন আহবায়ক কমিটি ও সাবেক কমিটির মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে, যার কারণে আ’লীগের কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্ধ সৃষ্টি হয়েছে। কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, ২০১৬ সালের ৭ জুলাই কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা কমিটি সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল হোসেনকে আহবায়ক ও অধ্যক্ষ আবু ইউছুফকে সদস্য সচিব করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি প্রায় ৩বছর দায়িত্ব পালন করার পর ২০১৯ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর রফিকুল হোসেনকে সভাপতি ও অধ্যক্ষ আবু ইউছুফকে সাধারণ সম্পাদক করে পুর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ১২ অক্টোবর উপজেলা আ’লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক জয়নাল আবেদীনকে আহবায়ক ও অধ্যক্ষ ছাদেক হোসেন ভূঁইয়াকে যুগ্ম আহবায়ক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। আবার ২০২২ সালের ৩ ডিসেম্বর উপজেলা আওয়ামীলীগের উদ্যেগে নাঙ্গলকোট হাইস্কুল মাঠে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে কোন কমিটি ঘোষণা না দিয়ে ১১ ডিসেম্বর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সামছু উদ্দিন কালুকে সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ভূঁইয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা দেয়া হয়। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ২৬ মার্চ অধ্যক্ষ আবু ইউছুফকে সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য আবু বকর ছিদ্দিক আবুকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। ৭ মাসের মাথায় একই বছরে গত ২ নভেম্বর রফিকুল হোসেন চেয়ারম্যানকে আহবায়ক ও অধ্যক্ষ ছাদেক হোসেন ভূঁইয়াকে সদস্য সচিব করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন দেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা সভাপতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক মুজিব। ৫ নভেম্বর বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নব গঠিত আহবায়ক কমিটি ছড়িয়ে পড়লে নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামীলীগ দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। যার ফলে সভা সমাবেশের মাধ্যমে একে অপরকে আক্রমণান্তক বক্তব্য প্রদান করেন।
উপজেলা আ’লীগের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ আবু ইউছুফ বলেন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা সভাপতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক মুজিব গত ২৬ মার্চ উপজেলা আ’লীগের পূর্বের কমিটি বিলুপ্ত করে আমাকে সভাপতি এবং আবু বকর ছিদ্দিক আবুকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। আমরা গত ৭মাস সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। যেসব ইউনিয়নে কমিটি মেয়াদ উর্ত্তীণ হয়েছে, আমরা সে সকল ইউনিয়নের কমিটি পূর্ণ গঠন করেছি। এছাড়া বিভিন্ন দলীয় কার্যক্রম, প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী, কর্মী সমাবেশ করেছি। অর্থমন্ত্রী গত ২নভেম্বর সংসদ ভবনে আ’লীগের দলীয় কোন্দল নিরশন কল্পে সকল নেতাকর্মীদের নিয়ে বসেছে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে ৭দিনের মধ্যে দু’পক্ষের বিরোধ সমাধানের দায়িত্ব দেয়া হয়। সভায় পূর্বের কমিটি বাতিল বা নতুন কোন কমিটি নিয়ে কোন ধরণের আলোচনা হয়নি। বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারি, একই দিনে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট আরেকটি আহবায়ক ঘোষণা করা হয়। যাহা গঠনতন্ত্রের পরিপন্থি। এতে করে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।
উপজেলা আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু বকর ছিদ্দিক আবু বলেন, আওয়ামীলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ১১ মাসে ৩টি কমিটি হতে পারে না। এটি গঠনতন্ত্রের পরিপন্থি।
নবগঠিত আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব অধ্যক্ষ ছাদেক হোসেন বলেন, জেলা কমিটির স্বাক্ষরিত চিঠি আমরা হাতে পেয়েছি। তার আলোকে কমিটির কার্যক্রম বাস্তবায়ন শুরু করছি।