নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ও মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বিবৃতিতে বলেছেন, ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস; আলোর পথে এগিয়ে চলার প্রত্যয়দীপ্ত দিন। বাঙালি জাতির জীবনে এক তিমির বিদারী আলোর রেখায় হিমালয়সম বাঁধার পাহাড় পেরিয়ে এগিয়ে যাবার দিন। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধার এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে তিনি সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন এবং তার উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি প্রার্থনা করেন।
বিবৃতিতে অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেন, আজ ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। বাঙালির জাতীয় জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের অগ্নি শপথে স্বৈরতন্ত্রের কপাট ভেদ করে মুক্তির মন্দির সোপান তলে আত্মনিবেদনের মন্ত্র-বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার দিন। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বুটের তলায় পিষ্ট সাহস আর বেয়োনেটে ক্ষত-বিক্ষত শক্তি পুনরুজ্জীবনের দিন। দীর্ঘ ৬ বছর নির্বাসনের পর ১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হয়েছিল বীর বাঙালির জীবনীশক্তি পুনরুজ্জাগরণের সঞ্জিবনী প্রবাহ। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যেদিন স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন সেদিন রাজধানী ঢাকা পরিণত হয়েছিল মিছিলের নগরীতে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মিছিল। প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টিও মিছিলের গতি রোধ করতে পারেনি। স্লোগানেও পড়েনি ভাটা। লাখ কণ্ঠের স্লোগান ৯ বছর আগের বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারিকেই স্মরণ করিয়ে দিয়েছিল।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে ঘাতকের নির্মম বুলেটে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। সৌভাগ্যক্রমে বিদেশে থাকায় আল্লাহর অশেষ রহমতে প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যার পর এবং খুনি খন্দকার মোশতাক চক্রের ষড়যন্ত্রে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের প্রগতিশীল রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান আওয়ামী লীগ যখন চরম দুরাবস্থার শিকার, তখন আওয়ামী লীগের মতো এমন একটি বৃহৎ পরিবারের জন্য প্রয়োজন ছিল ঐক্যসূত্র। মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনার অনুসারীদের ঐক্যের প্রতীক হয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্বে আবির্ভূত হন তিনি। ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে জাতির এক ক্রান্তিলগ্নে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।
তিনি বলেন, ছোট্ট শিশুপুত্র ও কন্যাকে বিদেশ বিভূঁইয়ে ফেলে ১৯৮১ সালের মে মাসে তিনি দেশে ফিরে আসেন। সামরিক শাসকদের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। দেশে ফিরে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে সামরিক জান্তা ও স্বৈরশাসন এবং দেশবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলে একটানা অকুতোভয় সংগ্রাম। জেল-জুলম, অত্যাচার কোনোকিছুই তাকে তার পথ থেকে টলাতে পারেনি এক বিন্দুÑ শত প্রতিকূলতাতেও হতদ্যোম হননি কখনো। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত কর্তব্য সম্পাদন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন রূপায়নে বাঙালি জাতির ইতিহাসে গৌরবোজ্জ্বল নতুন অধ্যায় যুক্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বেই বাঙালি জাতি আবারও তাদের ভাত ও ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছে। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। এক সময়ের দুর্যোগ-দুভিক্ষ কবলিত ও দারিদ্র্যপীড়িত বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে। বিশ^সভায় বাংলাদেশ একটি আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।