মোঃ কামাল হোসেন, কুমিল্লা প্রতিনিধি
হোমনায় প্রেমঘটিত কারণে মোঃ ফয়সাল (১৮) নামের এক যুবককে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার ১৬ জুন সন্ধ্যায় হোমনা-মেঘনা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ ফজলুল করিমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম উপজেলার দুলালপুরে আমিরুল ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন চারতলা ভবনের মাটির নীচ থেকে জবাই করা বস্তাবন্দি লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দুলালপুর ইউনয়িনের রাজনগর গ্রামের মুকবুল মিয়ার ছেলে ফয়সাল (১৮) এর সাথে একই গ্রামের ফুল মিয়ার মেয়ে মেহেদী আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। মেহেদি উপজেলার রামকৃষ্ণপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের মানবিক ২য় বর্ষের ছাত্রী ছিল। আর ফয়সাল ৫ম শ্রেণি পাশ করে ঢাকায় একটি কোম্পানিতে চাকুরী করত। মেহেদির সাথে প্রেমের সম্পর্কের কারণে ফয়সাল প্রায়ই বাড়িতে চলে আসতো। ৫ম শ্রেণি পাশ ছেলের সাথে কলেজ পড়ুয়া মেয়ের সম্পর্ক মেয়ের পরিবার মেনে নিতে পারেনি। এ নিয়ে দুই পরিবারের মাঝে মনোমালিন্য চলে আসছে। গত শুক্রবার ৫ জুন রাত সাড়ে ৯টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিল ফয়সাল। কে বা কারা ফয়সালকে মোবাইলে ডেকে নেয়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ হয়। সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মোঃ ফজলুল করিম বলেন, থানায় নিখোঁজ ডায়েরী করার পর প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে রহস্য উদঘাটনে কার্যক্রম চালাই। পরবর্তীতে ফুল মিয়ার মেয়ে মেহেদী আক্তার ও স্ত্রী লাইলী আক্তার নদীতে রক্ত মাখা পলিথিন ধোয়ার সূত্র ধরে তাদেরকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করি। মেয়ের ভাই শামীমকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর হত্যার রহস্য উদঘাটিত হয়। তার দেখানো মতে বিদ্যালয়ের মেঝে থেকে বস্তাবন্দী এ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমেক হাপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী মোঃ জসিম মিয়া জসুকে আটক করা হয়েছে। জসু মিয়া ফুল মিয়ার শ্যালক। তিনি বলেন, প্রেমঘটিত বিষয়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে শামীম পুলিশের নিকট স্বীকার করেছে। ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জসিম উদ্দিন সওদাগর বলেন, ফুল মিয়া পার্শ্ববর্তী বাঞ্ছারামপুর উপজেলার পাইকারচর গ্রাম থেকে এসে এখানে বসবাস করছে। সে এবং তার শ্যালক একাধিক হত্যা মামলার আসামী। সে পেশায় একজন কসাই। লাশ উদ্ধারের সময় পুলিশ পরিদর্শক (ডিবি) ইফতিয়ার হোসেন, ওসি মোঃ আবুল কায়েস আকন্দ, ওসি (তদন্ত) আমিনুর রসুল, সহকারী পুলিশ পরিদর্শক (ডিবি) পরিমল চন্দ্র দাস পিপিএমসহ সঙ্গীয় ফোর্স উপস্থিত ছিলেন।