হরিণাকুন্ডু (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলায় গত ৫ জানুয়ারিতে ৮টি ইউনিয়নে নির্বাচনের পর আওয়ামীলীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের হট্টগোল, বসতবাড়িতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যমতে, গত বুধবার ভোট ভোট গণনার পরদিন হরিণাকুন্ডু উপজেলার কাপাশহাটীয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে দুই মেম্বার কুরবান আলীর কর্মী-সমর্থক ও কাজী মশিয়ার এর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষনার পরের দিন বিজয়ী প্রার্থী কুরবান ও মশিয়ারের মধ্যে এ সংঘর্ষ বাঁধে। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার কাপাশহাটীয়া ইউনিয়নের পোল ভাতুড়িয়া গ্রামে দুই গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীরা জানান, দীর্ঘদিনের পুরাতন শত্রুতার জের ধরে গত বৃহস্পতিবার কাজী মশিউর মেম্বার নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর কুরবান মেম্বার সমর্থিতদের সাথে একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাঁধলে মুহুর্তেই ছড়িয়ে পড়ে বৃহত্তরভাবে। এখনো পর্যন্ত তারা নানাভাবে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আসছেন বলেও জানা গেছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পুরুষশুন্য এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আমরা কাজী মশিয়ারকে ফুটবলে ভোট দিয়েছি। নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর কুরবান মেম্বার তার দলবল সাথে করে হাসুয়া রামদা নিয়ে আমাদের বসতবাড়িতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। কুরবান মেম্বার ও তার গুন্ডাবাহিনীদের অত্যাচারে আমাদের বাড়িতে কোনও পুরুষ মানুষ নেই। থানায় মামলা করেও আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তারা আমাদের প্রতিনিয়ত হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। এমনকি বাড়ির নারী ও শিশুরাও নিরাপদে নেই। মেয়েদেরকে বাসা থেকে বিবস্ত্র করে বাড়ী থেকে বের করে দেয়ার কথাও জানান। এ ঘটনায় নগদ টাকা স্বর্ণালঙ্কারসহ আসবাবপত্র ভাংচুরে ৯ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় নবনির্বাচিত মেম্বার মোঃ কুরবান আলীর সাথে কথা বলতে তার নিজ বাসগৃহে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ফোনটি বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে কাপাশহাটীয়া ইউপি চেয়ারম্যান এর চাচাতো ভাই জানান, ঘটনা যাই ঘটুক এটা সম্পূর্ণ অন্যায়। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো আছে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামীদের ধরার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এখনো পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। আসামীরা পালাতক রয়েছে বলে জানান এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মহাসিন। এ ঘটনায় উপজেলার নবনির্বাচিত কাপাশহাটীয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরাফত দৌলা ঝন্টু জানান, ঘটনাটি অনাকাক্সিক্ষত। আমরা এ নিয়ে দ্রুতই সামাজিকভাবে মীমাংসা করতে পারবো বলে আশা করি।