নিজস্ব প্রতিবেদক
গত দুইদিনের তুলনায় মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের শিমুলিয়া ঘাটে যাত্রী চাপ অনেকটা কমে এসেছে। অনেকটা স্বস্তির নিঃশ^াস ফেলছে এখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। গতকাল সোমবার দুপুর ৩টার দিকে চাপ একেবারেই কমে আসে ফেরিঘাট এলাকায়। গত কয়েকদিন ফেরি বন্ধের নির্দেশনা আসলে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা ঘাটে দুর্ভোগে পড়েন। হঠাৎ ফেরি বন্ধের ঘোষণায় ঘাট এলাকায় ছোট গাড়ির লম্বা লাইন তৈরি হয়েছে। ভোগান্তির শিকার হয়েছেন ঘাটে আটকে থাকা গাড়ির চালক ও সাধারণ যাত্রীরা। ঘাট পারাপারে মরিয়া হয়ে পড়েন যাত্রীরা। ঈদের ঘরমুখো যাত্রীদের মানবিকতার কথা বিবেচনা করে সব রুটে ফেরি চলাচলের অনুমতি দিয়েছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়। গতকাল সোমবার দু’দিন বন্ধ রাখার পর শিমুলিয়া-বাংলাবাজার, মাওয়া ঘাটে ফেরি চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী। এমনটা জানিয়েছেন মাওয়া ঘাট সংশ্লিষ্টরা। ঘাটে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা অনেক দুর্ভোগে পড়েছেন। এসব মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করেই ফেরি চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। মূলত মানবিক বিষয় চিন্তা করেই ফেরি চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সকালে তিনটি ফেরিতে জরুরি লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স পারাপারের সঙ্গে ঘাটে আসা অধিকাংশ যাত্রীদের নদী পার হতে দেখা যায়। ঘাটে এখনো সাড়ে ২ শতাধিক যানবাহন গাড়ি পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। এসব গাড়ির মধ্যে রয়েছে পণ্যবাহী ট্রাক ও পিকআপ। গতকাল সোমবার সকাল থেকে ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েসহ শিমুলিয়া ঘাটের বেশ কয়েকটি প্রবেশমুখে বিজিবি-পুলিশের একাধিক চেকপোস্ট, এখানে দায়িত্বপাপ্তরা ব্যক্তিগত গাড়ি ঘাটে প্রবেশ করতে দেয়নি। তবে ফেরি চলাচলের নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে সব স্বাভাবিক হয়ে যায়। ঘাট সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জরুরি গাড়ির আওতায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স পারাপারে সকাল সাড়ে ৬টায় একটি ডাম্পফেরি, সকাল ১০টার দিকে ফেরি যমুনা ও দুপুরে শিমুলিয়া থেকে ছেড়ে যায় ফেরি শাহপরাণ। বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়েত আহমেদ জানান, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পাওয়ার পর বিকালে পদ্মায় ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়। এ অবস্থায় যাত্রীদের নিয়েই ফেরিগুলো গন্তব্যের দিকে দিকে ছেড়ে যায়। এরপরই ঘাট এলাকায় যাত্রী চাপ কমে আসে। মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ হিলাল আহমেদ জানান, ঘাটে বর্তমানে সাড়ে ২ শতাধিক পণ্যবাহী যানবাহন ও কিছু সংখ্যক যাত্রী রয়েছে।
এদিকে লৌহজংয়ে পদ্মা নদীতে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও যাত্রী পারাপারের সময় চালকসহ ১৮টি ট্রলার আটক করেছে মাওয়া নৌ-পুলিশ। গত রোববার দিনব্যাপী নদীর শিমুলিয়া ফেরিঘাট, লৌহজং চ্যানেলে মাওয়া মৎস্য আড়ৎ এলাকায় অভিযান চালিয়ে চালকসহ এসব ট্রলার আটক করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে ১৬ জন ট্রলার চালককে একই দিন বিকেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অপর দুইজন চালক অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। মাওয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি আরো জানান, ট্রলারগুলোকে লকডাউন শেষ না হওয়া পর্যন্ত নৌপুলিশ হেফাজতে রাখা হবে। মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ হিলাল আহমেদ জানান, সকাল সোয়া ১০টার দিকে পাঁচটি লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স ছিলো সেগুলোকে পার করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঘাটে ভিড় করা যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানার প্রবণতা ছিলো কম। তিনি আরো বলেন, বিকালে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় জানতে পেরেছি ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রাখার কথা। ফেরি চলছে কিন্তু চাপ কম।