আসাদুজ্জামান,সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ সাফিনুল ইসলাম বলেন, দেশের সর্ব দক্ষিণে সুন্দরবনের মধ্যে দুটি ভাসমান বিওপি স্থলভাগ থেকে এতো দুরে আমাদের সৈনিকরা কিভাবে থাকে সেটা দেখতে এবং বিওপির সংখ্যা আরোও বাড়াতে সম্ভব্য জায়গা নির্ধারণ করতে এসেছি। সুন্দরবনের এই দিকে ভারতীয় সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী নিয়মতি টহল কার্যক্রম পরিচালনা করে তাদের সাথে সামনযস্য রেখে টহল কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে সেজন্য আমাদের এই বিওপি স্থাপন। সীমান্ত রক্ষা করার পাশাপাশি চোরাচালান রোধ, ডাকাতি এবং সুন্দরবনকে রক্ষা করার জন্য বিজিবির পক্ষ থেকে সাহয্য সহযোগিতা করার দরকার সেটা এই দুটি ভাসমান বিওপির মাধ্যমে করতে পারি। সুন্দরবনে যাবের তৎপরতার কারণে দস্যুতা অনেক কমে গেছে। তাদের কাছে অনেক দস্যু বাহিনী আত্মসমার্পণ করেছে। এ ব্যাপারে আমরাও অনেক কাজ করছি। বুধবার দুপুরে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে বিজিবি’র খুলনা সেক্টরের রিভারাইন বর্ডার গার্ড কোম্পানীর অধীনস্থ কাঁচিকাটা ভাসমান বিওপি পরিদর্শনকালে তিনি এসব বলেন।
তিনি আরোও বলেন, বর্তমান সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বিজিবি’র এয়ার উইং সৃজিত হয়েছে এবং দুটি হেলিকপ্টার ক্রয় করা হয়েছে। এই হেলিকপ্টারের মাধ্যমে দূর্গম বিওপিগুলোকে বিভিন্নভাবে সহায়তা প্রদান করা আরো সহজ হবে। তাছাড়া জলসীমান্তের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং সুন্দরবন ও সেন্টমার্টিনসহ বাংলাদেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের আগ্রাসন রোধে নজরদারী বৃদ্ধি, নিজস্ব জল সীমানায় আধিপত্য বিস্তার ও অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিজিবির সাংগাঠনিক কাঠামোতে ০৪টি হাইস্পীড ইঞ্জিন বোট, ০২টি ফাস্ট ক্রাফট ও ০১টি লজিস্টিক শীপ ক্রয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এতে বিওপিসমূহের অপারেশনাল দক্ষতা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা বর্তমানের চেয়ে অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।
পরিদর্শনকালে খুলনা সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল মো: আরশাদুজ্জামান খান, ১৭ বিজিবির অধিনায়কসহ বিজিবি’র অন্যান্য কর্মকর্তা এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, দেশের মোট ৪,৪২৭ কিঃ মিঃ বিস্তৃত সীমান্ত এলাকার মধ্যে ২৪৩ কিঃ মিঃ জলসীমা রয়েছে যার মধ্যে ১৮০ কিঃ মিঃ জলসীমা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে অবস্থিত। উল্লেখ্য, দেশের স্থল সীমান্তে বিজিবি’র কঠোর পদক্ষেপের ফলে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য পাচার, মানব পাচার ও অন্যান্য চোরাচালান উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু চোরাকারবারীরা প্রতিনিয়ত রুট পরিবর্তন করতঃ নৌ-পথকেও বেছে নিচ্ছে। তাছাড়া বনদস্যু ও জলদস্যুরা সুন্দরবনসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জলসীমান্তে নানা ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে। এই বিস্তৃত জলসীমায় বিজিবি’র পর্যাপ্ত জলযান, ভাসমান বিওপি এবং জনবল না থাকায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সুন্দরবনের এই গহীন অরণ্যের জল সীমান্তে যথাযথ নজরদারী ও অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটছে। তাই জলসীমায় বিজিবি’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে বিজিবি কাজ করে যাচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে এই অঞ্চলে আরও দু’টি ভাসমান বিওপি স্থাপন করা হবে। মহাপরিচালকের এই পরিদর্শনের মাধ্যমে প্রস্তাবনাধীন দু’টি নতুন ভাসমান বিওপি স্থাপনের জন্য স্থান নির্বাচনের কাজ সম্পন্ন হলো।