নিজস্ব প্রতিবেদক: সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে সিলেট শহরময় ঘুরে বেড়ায় ভয়ঙ্কর একটি প্রতারক চক্র। নকল স্বর্ণ দেখিয়ে টার্গেট করে সহজ-সরল মানুষকে। বিশেষ করে তাদের লক্ষ্য থাকে নারীদের দিকে। নকল স্বর্ণের বার বা অলঙ্কার দেখিয়ে প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে মানুষের কাছ থেকে হাতিযে নেয় আসল স্বর্ণ বা টাকা। ভয়ঙ্কর এই চক্রের সক্রিয় এক সদস্য এবার ধরা পড়েছে।
ওই চক্রের ফাঁদে পড়ে প্রতারণার শিকার এক মহিলা নগরীর তালতলা পয়েন্টের কাছে নকল স্বর্ণসহ মুরাদ আহমদ মুরাদ নামে এক প্রতারককে আটক করেন। পরে ৯৯৯-এ কল দিয়ে তাকে তুলে দেন পুলিশের হাতে।
এসময় মুরাদের সহযোগী আরও ৩ প্রতারক পালিয়ে যায়। সিলেটে মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের জানান, সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা থানার আনন্দপুর গ্রামের হরি মোহন রায়ের স্ত্রী জয়ন্তি রানী রায় (৫২) ও তার মেয়ে পপি রানী রায় (২১) গত ৬ ফেব্রুয়ারি সিলেট কুমারগাঁও বাস স্ট্যান্ড থেকে সিএনজি অটোরিকশাযোগে তাদের ভাড়া বাসা নগরীর মির্জাজাঙ্গাল স্বপ্নীল-২৪-এ আসছিলেন।
ওই গাড়িতে ছিলেন সুনামগঞ্জের দিরাই থানার ভাটিপাড়া গ্রামের সমছুন নুরের ছেলে মুরাদ আহমদ মুরাদ (২৭), সিলেট এয়ারপোর্ট থানার মজুমদারী এলাকার আরজু মিয়ার ছেলে অয়ন (২৭), নগরীরর হাউজিং এ্যাস্টেট এলাকার রবিউল ওরফে লেম্বু (২২) ও সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার বাদশাগঞ্জ গ্রামের নুর মিয়া (৩২)।
তারা সবাই নকল স্বর্ণ দিয়ে প্রতারণা চক্রের সক্রিয় সদস্য। এর মধ্যে মুরাদ নামের প্রতারক ওইদিন (৬ ফেব্রুয়ারি) জয়ন্তি রানী ও তার মেয়ে পপি রানীকে একটি নকল স্বর্ণের বার দেখিয়ে আসল স্বর্ণ বলে দাবি করে এবং এক পর্যায়ে তাদের সেটি বিশ্বাস করিয়ে ফেলে।
প্রতারকদের প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে এসময় জয়ন্তি রানী তার পরনে থাকা কানের দুল ও কানটানা স্বর্ণের (১ লক্ষ টাকা ৩ হাজার টাকা দামের) অলঙ্কার প্রতারকদের দিয়ে দেন। বিনিময়ে প্রতারক মুরাদের কাছ থেকে নেন নকল স্বর্ণের ওই বার। বিষয়টি বাসায় এসে বুঝতে পারেন জয়ন্তি রানী। পরবর্তীতে শনিবার দুপুরে তিনি হঠাৎ মুরাদসহ তার সহযোগী প্রতারকদের আগের সেই সিএনজি অটোরিকশাসহ নগরীর বাগবাড়ি এলাকার বর্ণমালা পয়েন্টে দেখতে পান।
পরে জয়ন্তি রানী ধাওয়া করে নগরীর তালতলা পয়েন্টের কাছে দিলশাদ সিনেমা হলের সামনে এসে তাদের আটক করেন। এসময় তিনি ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশে খবর দিলে কোতয়ালি থানার টহলরত একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতারক মুরাদকে গ্রেফতার করে।
তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মুরাদের সহযোগী বাকি ৩ প্রতারক পালিয়ে যায়। গ্রেফতারের সময় মুরাদের কাছ থেকে ১ পিস নকল স্বর্ণের বার জব্দ করে পুলিশ। ওই বারের মধ্যে 22K লেখা। এছাড়াও প্রতারকদের ব্যবহৃত সিএনজি অটোরিকশাও জব্দ করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। কোতোয়ালি থানাপুলিশ পরে জব্দকৃত গাড়ি ও নকল স্বর্ণসহ মুরাদকে জালালাবাদ থানায় হস্তান্তর করে ।