নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ও মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, সাত দশক ধরে রাজপথ আওয়ামী লীগের দখলে আছে এবং সকল মহতি অর্জনের নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে কেউ পরাজিত করতে পারবে না। আওয়ামী লীগের কাছে যদি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্ব থাকে তাহলে আওয়ামী লীগকে পরাজিত করার কোনো শক্তি বাংলাদেশে নাই।
গতকাল শনিবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শামসুল আলম ভূইয়ার সভাপতিত্বে ও যুগ্ম-আহ্বায়ক কায়সার হাসনাতের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাড. কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, আইন বিষয়ক সম্পাদক কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য সানজীদা খানম, শাহাবুদ্দিন ফরাজী, সৈয়দ আব্দুল আওয়াল শামীম, শামীম ওসমান এমপি, মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী, আনোয়ার হোসেন, নজরুল ইসলাম বাবু এমপি, আবুল হাসনাত শহীদ বাদল, আব্দুল হাই, আনিচুর রহমান দিপু প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আমাদেরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আওয়ামী লীগকে দেখে নেওয়ার মতো সুযোগ কোনো রাজাকার পুত্রের ঘটবে না। ভয় আমাদের দেখাবেন না, সাত দশক ধরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা রাজপথ দখল করে আছে এবং বাংলাদেশের সকল মহতি অর্জনের নেতৃত্ব দিয়েছে। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগের কাছে যদি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্ব থাকে তাহলে আওয়ামী লীগকে পরাজিত করার কোনো শক্তি বাংলাদেশে নাই।
একটি রাজনৈতিক সংগঠনে মতৈক্য থাকতে পারে, মতদ্বৈততা থাকতে পারে, মতপার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু বিএনপি-জামাতিদের বিরুদ্ধে লড়তে চাইলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্যবদ্ধতার কোনো বিকল্প নাই। যেকোনো মূল্যে আমাদের মতৈক্যে পৌঁছাতে হবে। যদি আমরা মতৈক্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হই- তাহলে ১৯৯১ থেকে ৯৬ আপনারা দেখেছেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ দেখেছেন; কি না করেছে ওরা। ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমাদের পরম শ্রদ্ধেয়া নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাসহ গোটা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকে ওরা হত্যা করতে চেয়েছিল। আপনারা কী ভুলে গেছেন এই খালেদা জিয়া ও তার পুত্র তারেক রহমানের নেতৃত্ব; শাহ এ এম এস কিবরিয়াকে হত্যা করা হয়েছে, মঞ্জুরুল ইমামকে হত্যা করা হয়েছে, আহসান উল্লাহ মাস্টারকে হত্যা করা হয়েছে, মমতাজ উদ্দিনকে হত্যা করা হয়েছে। হাজার হাজার নেতা-কর্মীর রক্তে প্লাবিত হয়েছে এই বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ অফিসে বিএনপি-জামাতিরা ন্যাক্কারজনক বোমা হামলা চালিয়েছিল। কতগুলো মানুষের প্রাণ তারা কেড়ে নিয়েছিল। ২১ শে আগস্ট নারীনেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন সন্ত্রাসবিরোধী শান্তিসংগ্রামীকে ওরা কেড়ে নিয়েছিল। এই বিএনপি-জামাতিরা আমাদের কিবরিয়া সাহেবকে যেমন হত্যা করেছে তদ্রুপভাবে বাংলার নববর্ষে রমনার বটমূলে ছায়ানটের অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়েছিল, পুরানা পল্টনের কমিউনিস্ট পার্টির সম্মেলনে হামলা করেছিল, যশোরের উদীচির সম্মেলনে হামলা করেছিল। আমাদের দেশে যেসকল সুফি-সাধকেরা এ দেশে পবিত্র ইসলাম প্রচার করেছিলেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হযরত শাহজালাল-এর মাজারের গজাল মাছগুলোকে ওরা মেরে ফেলেছিল; হযরত শাহজালাল-এর মাজারে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে হত্যা করতে চেয়েছিল। ওরা খুলনার খানজাহান আলীর মাজারে অক্রমণ করেছিল। ওরা দেশের সব চেয়ে বড় ঈদের জামাত কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় আক্রমণ করেছিল। ঢাকার মোহাম্মদপুরে নামাজরত অবস্থায় আওয়ামী লীগ করার অপরাধে একজনকে মসজিদে ঢুকে জবাই করে হত্যা করেছিল। সেজন্য সকলকে বলবো, আমাদের অনেক্যৈর কারণে যদি বিজয় হাতছাড়া হয়ে যায় তাহলে সেই ভয়াবহ দুর্ভোগ আবার নেমে আসবে।