সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে ৭০টি উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম ভালই চলছে। শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ স্কুল পরিচালনায় নিয়োজিত শিক্ষক, সুপারভাইজাররা খুশি।
জানা গেছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহযোগিতায় বাস্তবায়ন সহযোগী সংস্থা সাতক্ষীরা উন্নয়ন (সাস) এবং কলারোয়া উপজেলায় বাস্তবায়ন সহযোগী সংস্থা হিসেবে উন্নয়ন পরিষদ (উপ) আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো পরিচালনা করছে। এ শিক্ষা কার্যক্রমটি ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে চালু হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কলারোয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ৭০টি উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিটি বিদ্যালয়ে ৩০ জন করে মোট ২ হাজার ১০০ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে। বিদ্যালয়গুলো পরিদর্শন করার জন্য ৫ জন প্রোগ্রাম সুপারভাইজার, ১ জন সাপোর্টিং স্টাফ এবং ১ জন উপজেলা প্রোগ্রাম ম্যানেজার নিযুক্ত রয়েছে। প্রতিটি উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১ জন করে মোট ৭০ জন শিক্ষক রয়েছে। অধিকাংশ শিখন কেন্দ্রে ৩০ জন করে শিক্ষার্থী উপস্থিত রয়েছে।
উপজেলার কয়লা ইউনিয়নের পূর্ব কয়লা উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ৩০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৯ জন উপস্থিত। তাহমিত হাসানসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, তারা নিয়মিত ক্লাস করে। তাদের আপা খুবই সুন্দর করে পাঠদান বুঝিয়ে থাকেন। তারা খাতা, স্কুল ড্রেস, স্কুল ব্যাগসহ বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষা উপকরণ পেয়েছে।
শিখন কেন্দ্রের শিক্ষক নাসরিন সুলতানা জানান, আমার বিদ্যালয়সহ ৭০টি বিদ্যালয় পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ উন্নয়ন পরিষদ (উপ) সরবরাহ করে থাকেন। শিখন কেন্দ্রের শিক্ষক সম্মানী বাবদ প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা এবং ঘরমালিক ঘর ভাড়া বাবদ প্রতিমাসে ১ হাজার ২শত টাকা করে পেয়ে থাকেন। সরেজমিনে গেলে, উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে আনন্দ ও বিজয়োল্লাস পরিলক্ষিত হয়। পাঠ্যবইয়ের পাঠদানের পাশাপাশি সহপাঠ ক্রমিক কাজে যথেষ্ট পারদর্শিতার পরিচয় মিলছে।
প্রোগ্রাম সুপারভাইজার মমতাজ পারভীনসহ ৫ জন সুপারভাইজার বলেন, তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন এবং বেতন-ভাতা প্রতিমাসে পেয়ে থাকেন বলে তারা জানান।
উপজেলা প্রোগ্রাম ম্যানেজার রবিউল ইসলাম জানান, তাদের প্রতিমাসের সম্মানী ভাতা, প্রতিটি বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে। তার মধ্যে ফ্লোরম্যাট, পতাকা, বিদ্যালয়ের সাইনবোর্ড, ব্ল্যাকবোর্ড, ডাস্টার, চক, কাঠ পেনসিল, রং পেনসিল, ফ্যান, এলইডি বাল্ব, পানির জগ, তালা-চাবি, ট্রাঙ্ক, টুল, চেয়ার, স্টাপলার মেশিন, কেচি, ছুরি, ওয়েস্ট পেপার বাস্কেট, সুইং নিডলস ও সুতা, স্টাপলার পিন, আইকা আঠা, থ্রেট বল, রাবার ব্যান্ড, ম্যাট্রিয়াল ট্রে, প্রয়োজনীয় রেজি:, শার্পনার, অঙ্কন খাতা, ইংরেজি, বাংলা, গণিত খাতা এবং স্কুল ড্রেস, স্কুল ব্যাগ, খেলার উপকরণ হিসেবে দাবা, লুডু, বাগাডুলি, স্ক্যাবল বোর্ড, রুবিক্স কিউব, পাজলসহ ইত্যাদি উপকরণ প্রদান করা হয়েছে। যেটি বাস্তবেও চোখে মিলেছে।
উপজেলার পাঁচপোতা স্কুলের শিক্ষার্থী লামিয়ার পিতা সাহাবুদ্দীন জানান, আমার মেয়ে পাঁচপোতা উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনাকরে। এই স্কুলের লেখাপড়ার মান ভালো। আমার মেয়ে ভর্তি করানোর সময় যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো তার সবগুলো দিয়েছে এবং এসব স্কুলের লেখাপড়ার কার্যক্রম ভালই চলছে।