শরীফুল ইসলাম, সখিপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার বহেড়াতৈল ইউনিয়নের কালিয়ান গ্রামে কলেজছাত্র মাজহারুল কিশোর গ্যাং কর্তৃক হত্যার প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় কালিয়ান বাজারে হত্যার প্রতিবাদে ও হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী, নিহতের পরিবার, স্বজন, সহপাঠী, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা। ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে প্রায় দুই সহস্রাধিক লোকজন অংশগ্রহণ করেন। এসময় মাজহারুল এর হত্যাকারীদের ফাঁসি ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বক্তব্য রাখেন কালিয়ান বিদ্যা নিকেতন প্রি-ক্যাডেট স্কুলের পরিচালক সফিকুল ইসলাম, বহেড়াতৈল যুব আন্দোলন সভাপতি দিদারুল আলম, স্বদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা বাংলাদেশ এর দপ্তর সম্পাদক আমিন আল মামুন, অবঃ সেনা সদস্য জহিরুল ইসলাম গোলাপ, কালিয়ান বাজার বনিক সমিতির সাবেক সভাপতি আতিকুজ্জামান সবুজ, কালিয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আসলাম সিকদার নভেল, লায়ন ফেরদৌস আলম কলেজের প্রভাষক মো. আবু কাউসার, বহেড়াতৈল ৭, ৮, ৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মোছাঃ স্বপ্না আক্তার, বীর মুক্তিযোদ্ধা তমছের আলী, স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুজ্জামান রতন, কালিয়ান উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামান কামরুল, মাজহারুলের বাবা আ. মালেক, বোন মার্জিয়া প্রমুখ।
উল্লেখ্য, সখিপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত মাজহারুল ইসলাম (২২) নামের কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। গত ১২ সেপ্টেম্বর সোমবার রাত দেড়টায় রাজধানী ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই কলেজছাত্র মারা যায়। নিহত মাজহারুল উপজেলার কালিয়ান গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে। সে টাঙ্গাইলের করটিয়া সরকারি সা’দত কলেজের সম্মান প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার কালিয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে গত ৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেলে এলাকার বিবাহিত বনাম অবিবাহিতদের সমন্বয়ে এক ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলা দেখতে আসা মেয়েদের নানাভাবে উত্যক্ত করে কালিয়ান দোহানিয়া পাড়ার কয়েকজন বখাটে ছেলে। এসময় মাজহারুল তাদের উত্যক্ত করতে নিষেধ করলে ঘটনাস্থলেই তাকে কিল, ঘুষি দেয় স্থানীয় বখাটে ইয়ারুল ও তার সহযোগীরা। এরপর খেলা শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে আবারো কালিয়ান গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে ইয়ারুল ইসলাম (১৯), রশিদ মিয়ার ছেলে সাব্বির আহমেদ (১৯), মৃত কুদ্দুস মিয়ার ছেলে ফরিদ মিয়া, শহীদ মিয়ার ছেলে শান্ত মিয়া, মৃত কুদ্দুসের ছেলে শহীদ মিয়া, মো. আনোয়ারের ছেলে আলমগীর হোসেন আসাদ, মো. আনোয়ারের ছেলে সুজন মিয়া, নজরুল ইসলামের ছেলে স্বাধীন মিয়া, মৃত কুদ্দুসের ছেলে রশিদ মিয়া এবং বাসাইল উপজেলার মান্দারজানি এলাকার ইসমাইল মিয়ার ছেলে আলী হোসেন, বুলবুল মিয়ার ছেলে তানজিদ, মানিকের ছেলে সিয়ামসহ ২০/২৫ জনের একটি সঙ্গবদ্ধ দল লোহার রড, দা দিয়ে মাজহারুলের উপর আবারও আক্রমণ করে। এসময় চিৎকার শুনে তার বাবা ও অন্যান্যরা মাজহারুলকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে সখীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে তিনদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত সোমবার রাত প্রায় ১টা ১৫ মিনিটে মাজহারুলের মৃত্যু হয়।