নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন- শান্তিপূর্ণ সমৃদ্ধ দেশ বিনির্মাণে সকল সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুখী সমৃদ্ধশালী সমাজ-রাষ্ট্র বিনির্মাণে সম্মিলিত প্রয়াস চালিয়ে যেতে হবে।
গতকাল রবিবার জেলা সন্ত্রাস, মাদক নাশকতা প্রতিরোধ কমিটি এবং জেলা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সভায় এ কথা বলেন তিনি। জেলা প্রশাসক মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন পিপিএম, সিভিল সার্জন ডা. আবুল কালাম আজাদ, জেলা প্রেসক্লাব সভাপতি সাংবাদিক মীর নাসির উদ্দিন উজ্জ্বল, বিশিষ্ট আইনজীবী অজয় চক্রবর্তী, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ লুৎফর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ এবং জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের দায়িত্বে নিয়োজিত স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ। বক্তব্যের শুরুতেই অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস- মহিমান্বিত রজনী লাইলাতুল কদরে সকলকে মহান আল্লাহ্ রব্বুল আলামিনের দরবারে করোনা মহামারিসহ সকল সঙ্কট মোচনের জন্য প্রার্থনার আহ্বান জানান এবং সকলের প্রতি অগ্রিম ঈদ শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেন, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, মাদক ও নাশকতা প্রতিরোধে প্রয়োজন সকলের সম্মিলিত ও আন্তরিক প্রচেষ্টা। আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মাণ করতে হলে এসব সামাজিক অপরাধ নির্মূলে সকলকে উদ্যোগী হতে হবে। অপরাধীর পরিচয় সে কেবল অপরাধীÑ তাই অপরাধ দমনে কারও প্রতি ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অপরাধী সে যেই হোক না কেন তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে। সামাজিক অপরাধের সূতিকাগার মাদক, মাদক ব্যবসা এবং সেবনের সাথে সম্পৃক্তদের সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করা কঠিন বিষয় নয়। তাই স্থানীয় প্রশাসনকে মাদক ব্যবাসায়ী ও মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালাতে হবে।
তিনি বলেন, ভূমিদস্যুতা, বালুদস্যুতা এবং নদী দখলের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। ভূমিদস্যুদের অত্যাচার থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে হবে। সরকারের খাস জমি, অর্পিত ও দেবত্বসম্পত্তি যাতে কেউ জোরপূর্বক দখল করতে না পারে এবং ভূমিহীনদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি জমিতে যাতে কেউ জোরপূর্বক বা নিয়মবহির্ভূতভাবে স্থাপনা গড়ে তুলতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে। এসময় তিনি পুলিশ প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এসব মতলব মহলের চক্রান্তের শিকার হয়ে যাতে কোন নিরীহ মানুষ মামলা-হামলার শিকার না হয় সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে।
তিনি বলেন, দখলে-দূষণে দেশের প্রধান নৌপথ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ নৌরুটটি বিনষ্ট হতে চলেছে। এই নৌপথকে রক্ষা এবং নিরাপদ করতে না পারলে চট্টগ্রাম এবং মংলা বন্দর ও দক্ষিণাঞ্চলের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়বে। পণ্য পরিবহন, বিপণন ব্যাহত হবে। দেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য এই নৌপথের কোনো বিকল্প নেই। তাই এই নৌপথকে রক্ষা করতে না পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চোখে আমরা চিরকাল ঘৃণিত থেকে যাবো। আমি নদী দখল-দূষণের বিরুদ্ধে সদা সোচ্চার রয়েছি। আপনারাও এগিয়ে আসুন, কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। তিনি বলেন, প্রায় মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ নৌরুটে নৌদুর্ঘটনা দেখা যায়Ñ নৌদুর্ঘটনায় নিহত মানুষের স্বজনদের আহাজারিতে শীতলক্ষ্মার দু’পাড় ভারি হয়ে আসে। এসব নৌদুর্ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নদীর দুইপাড়ের শিল্প-কল-কারখানাসমূহের লাইটার জাহাজসমূহ অবৈধভাবে এবং যত্রতত্র পার্কিং করে রাখে ফলে এই রুটে চলাচলকারী নৌযান প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয়। এ বিষয়ে প্রশাসনকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি বলেন, মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী কথা দিয়েছেন খুব শীঘ্রই এই হাসপাতালের উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। করোনা সঙ্কট মোকাবিলায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই। তাই হাট-বাজার, কল-কারখানায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও তৎপর হতে হবে। এই বিষয়ে সরকার নির্দেশিত বিধি নিষেধ বাস্তবায়ন করতে হবে।