ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের সদস্যদের মাঝে ৪র্থ পর্যায়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর উদ্বোধনের আশায় স্বপ্ন দেখছেন গৃহহীনরা। ‘আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ -এই প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত কার্যক্রমের অংশ হিসাবে আগামীকাল ২২ মার্চ সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একযোগে সারাদেশের আশ্রয়ণ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের অবশিষ্ট ও চতুর্থ পর্যায়সহ ৫৭ হাজার ৭৩৭টি গৃহ হস্তান্তর করবেন গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের মাঝে। এই অনুষ্ঠানে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় চতুর্থ ধাপে আবারো ১৬০টি পরিবারকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের নিবিড় তদারকি ও পিআইও অফিসের নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে ১৬০টি ঘরের সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। এখন শুধুমাত্র উদ্বোধনের অপেক্ষায় দিন পার করছেন অসহায়, হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল ১৬০টি পরিবার। অন্যের জায়গায়, অন্যের ঘরে থাকার বেদনা ভুলে নিজের জায়গায় থাকতে পেরে আনন্দে দিশেহারা সেসব ছিন্নমূল পরিবারগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সালমা বেগমের নিজের কোন জায়গা-জমি নেই। অন্যের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করে কোনরকমে সংসার পরিচালনা করেন তিনি। যে টাকা তিনি বেতন পান তা দিয়ে তাদের সংসার চলে না। এ সমস্যায় হিমশিম খাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে তিনি আশ্রয়ণ প্রকল্পের খবর পেয়ে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় সরকার দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জায়গাসহ ঘর দিবেন জেনে তিনিও আবেদন করেন। কোনরকম ঝামেলা ও খরচ ছাড়াই ঘর পেয়ে যান।
এ বিষয়ে রানীশংকৈল উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে তথ্য নিয়ে দেখেছেন যেন একটি পরিবারও ভূমিহীন ও গৃহহীন না থাকে। এই লক্ষ্যে কাজ করছে ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলা প্রশাসন। উপজেলায় যারা ভূমিহীন ছিল এমন পরিবারের তালিকা করে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি গৃহ ও দুই শতাংশ জমি তাদের নামে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
এ বিষয়ে ধর্মগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, আমার ইউনিয়নের মোট ৫০টি ভূমিহীন পরিবার ছিল। তারা প্রত্যেকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি করে গৃহ ও ২ শতক জমি পেয়েছেন। তিনি আরো বলেন, আমার জানা মতে, আমার ইউনিয়নে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার আর নেই। যদি থেকে থাকে তাহলে তারাও ঘর পাবে।
এ বিষয়ে রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ জানান, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে “বাংলাদেশের একজন মানুষও ভুমিহীন বা গৃহহীন থাকবে না” প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রাণীশংকৈল উপজেলায় ইতোমধ্যে ১৩৬৮টি গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। চতুর্থ পর্যায়ের ১৬০টি পরিবারকে পাকা গৃহ নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে যা আগামীকাল ২২ মার্চ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হস্তান্তর করবেন। প্রতিটি গৃহে দুটি বেডরুম, একটি বারান্দা, একটি রান্নাঘর ও একটি টয়লেট রয়েছে। প্রতিটি ঘরের নির্মাণ ব্যয় ২ লক্ষ ৮৪ হাজার ৫ শত টাকা। প্রতিটি গৃহে পৃথক মিটারসহ বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, খুবই স্বচ্ছতার সাথে উপজেলা প্রশাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে তথ্য নিয়ে এ উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত করার কাজ প্রায় শেষপর্যায়ের দিকে বলে জানা গেছে।