মঈন উদ্দীন বাপ্পী, রাঙামাট প্রতিনিধি : রাঙামাটিতে টানা এক সপ্তাহের বৃষ্টিতে পুরো জেলায় ৩৫৭স্থানে ক্ষুদ্র এবং মাঝারী পরিসরে পাহাড় ধস হয়েছিলো। ৫৯৯টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বন্যার পানিতে জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় পৃথক ঘটনায় ৩শিশুর মৃত্যু হয়েছে এবং বরকল উপজেলায় এখনো নিখোঁজ রয়েছে এক যুবক।
গতকাল থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি সরে যাওয়ার পর থেকে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। শ্রমজীবি মানুষদের কাজের গতি এখনো স্বাভাবিক হয়ে উঠেনি। এখনো বেশকিছু স্থান কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ডুবে আছে। তবে মানুষের মনে আতংক শুরু হয়েছে। পানিবাহিত রোগে তারা আক্রান্ত হবে।
বিলাইছড়ি ইউনিয়নের ফারুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মনু মারমা বলেন, আমাদের এলাকা থেকে পানি সরে গেলেও তীব্র বিশুদ্ধ পানি এবং খাদ্য সংকট দেখা গিয়েছে। বন্যায় আমাদের ফসলি জমি ক্ষতি হয়েছে। সরকারি সাহায্য না পেলে আমাদের এলাকার সকলকে খাদ্য এবং বিশুদ্ধ পানির অভাবে মরতে হবে।
বাঘাইছড়ি উপজেলার বাসিন্দা মো. শামীম বলেন, আমাদের কিছু জায়গা থেকে পানি সরে গেলেও কিছু স্থান এখনো ডুবে আছে। এখানে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যা চলে গেলে আমাদের এখানে মানুষ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হবে।
জুরাছড়ি উপজেলার সংবাদ কর্মী স্মৃতি বিন্দু চাকমা বলেন, খুব কষ্টে আছি। চারদিক পানিতে তলিয়ে গেছে। বিশুদ্ধ পানি এবং খাদ্য সংকটে ভুগছে এখানকার মানুষেরা।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৃষ্টিতে জেলার প্রধানমন্ত্রীর উপহার ২৮টি আশ্রয়ণের ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পাহাড় ধসে কারণে এক হাজার ৩১৩টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সড়ক যোগাযোগের ৬৯টি স্থানে ভাঙ্গন হয়েছে। ক্ষয়-ক্ষতি এড়াতে সংস্কার না করা পর্যন্ত সড়কের ১২টি স্থানে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
ঝড়ে ১৬টি ব্রিজ এবং কালভার্ট ক্ষতিগ্রহস্থ হয়েছে। ২১টি বিদ্যুতের খুঁটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পুরো জেলায় ৬৮৩.৫ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলো। ৪৩টি পুকুরের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। বন্যায় নিম্নাঞ্চল উপজেলার ১২৪টিঘর এবং বাজার প্লাবিত হয়েছিলো।
জেলা প্রশাসক মোশারফ হোসেন খান বলেন, এ পর্যন্ত জেলায় ২৬১টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছিলো। ওইসব আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেলো ৫৪৩১জন। তাদের সকালের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিলো।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও কয়েকদিন লেগে যাবে। জেলার সকলের সাথে সমন্বয় রেখে জেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।