ইয়ানূর রহমান : অনিয়ম বন্ধ করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যশোর শহরের অবৈধ দেশ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক পক্ষকে স্বাস্থ্য বিভাগ ১৫ দিনের আল্টিমেটাম দিলেও মানা হয়নি।
চিকিৎসাসেবায় নানা ত্রুটি সংশোধন না করে আগের মতো চলছে নামমাত্র এই স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানটি। যশোরের সিভিল সার্জন বলেছেন, মানবিক কারণে মালিক পক্ষকে সংশোধনের সুযোগ দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু আল্টিমেটামের তোয়াক্কা না করলে দেশ ক্লিনিক সিলগালা করা হবে।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে আসা রোগীর উপর ভর করে দেশ ক্লিনিক খুলে রাখা হয়েছে। সরকারি হাসপাতালের সামনে হওয়ায় দালালরাও রোগীর সাথে প্রতারণা করার সুযোগ পাচ্ছেন খুব সহজেই। বর্তমানে অবৈধ দেশ প্রতারণার শীর্ষে রয়েছে। লাইসেন্স বিহীন দেশ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসাসেবার পরিবেশ না থাকায় লাইসেন্স পাওয়ার অযোগ্য বলে স্বাস্থ্য অধিদফতরে প্রতিবেদন পাঠিয়েছিয়ে ছিলেন সাবেক সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন।
কারণ হিসেবে জানা যায়, বিশেষ চিকিৎসক, ডিগ্রিধারী সেবিকা, মেশিনারীজ, প্যাথলজিস্ট, ল্যাব ও টেকনিশিয়ান না থাকা। এছাড়া বিগত দিনে ১০ শয্যার অনুমোদন নিয়ে ১৫ টি শয্যা ছাড়া ৩ কেবিন থাকা। সিজারের পর আর চিকিৎসকের দেখা না মেলা ও মালিক পক্ষ ডাক্তার সেজে ছাড়পত্র দেয়া। ব্যবহারে অনুপযোগী অপারেশন থিয়েটার। দালালের মাধ্যমে ভাগিয়ে আনা রোগী এনে প্রতারণার মাধ্যমে বাণিজ্য করা। এছাড়া প্যাথলজির ভুয়া রিপোর্ট সরবরাহ করা।
সূত্র জানায়, অবৈধ দেশ ক্লিনিকের প্রতারণা নিয়ে গত ২৩ জানুয়ারি স্থানীয় পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হলে টনক নড়ে স্বাস্থ্য বিভাগের। ২৫ জানুয়ারি যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি পাল বিশ্বাসের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম দেশ ক্লিনিক পরিদর্শনে যান। এসময় নানা অনিয়ম ও কাগজপত্রের ত্রুটির সত্যতা পাওয়ায় সংশোধনের জন্য মালিক পক্ষকে ১৫ দিনের সময় আল্টিমেটাম দেয়া হয়।
অভিযোগ উঠেছে, স্বাস্থ্য বিভাগের আল্টিমেটামের পরও চিকিৎসা পরিবেশ ও কার্যক্রমে কোনো পরিবর্তন নেই। কোনো কিছু তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছামতো প্রতিষ্টান পরিচালনা করছেন মালিক রাজু আহমেদ। ফলে রাজুর খুঁটির জোর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য কর্মকর্তা ডা. রেহেনেওয়াজ জানান, পরিদর্শনে দেশ ক্লিনিকে নানা অনিয়ম চোখে পড়ে। সেখানকার চিকিৎসা পরিবেশ ভালো না। ২০১৭ সালের পর থেকে হালনাগাদ লাইসেন্স নেই।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপুল কান্তি বিশ্বাস জানান, সকল প্রকার অনিয়ম বন্ধ করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য দেশ ক্লিনিকের মালিক পক্ষকে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছিলো। এরমধ্যে যদি সংশোধন না হলে দেশ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করা হবে।
উল্লেখ্য, বিগত দিনে দেশ ক্লিনিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত একাধিকবার অভিযান চালিয়েছে। অনিয়ম ও প্রতারণার অভিযোগে তিনবারে সাড়ে ৩ লাখ টাকা জরিমানা গুণেছে মালিক পক্ষ।