ঢাকা টেক্সটাইল মিলের শ্রমিকদের ৪ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধসহ ৪ দফা দাবি
পূর্বধলা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের গাজীপুর এলাকায় ঢাকা টেক্সটাইল মিলসের শ্রমিকরা বকেয়া বেতনসহ ৪ দফা দাবিতে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ ও মিল গেইটে হামলা ভাংচুর করে। গতকাল রোববার ঢাকা টেক্সটাইল মিলের বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ ও মিল গেইটে হামলা-ভাংচুর করে। এসময় রাস্তার দুইপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। রাস্তায় প্রায় দেড় ঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।
খবর পেয়ে গৌরীপুর থানার সাব ইন্সপেক্টর শাহজালাল ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদেরকে রাস্তা থেকে সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করেন। তিনি জানান, শ্রমিকদের দু’মাসের বকেয়া বেতন আগামী ২৬ ডিসেম্বর প্রদানের বিষয়ে মালিকপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ডিসেম্বরের বকেয়া বেতনের সঙ্গে আরেক মাসের বকেয়া জানুয়ারি মাসে প্রদান করবেন। শ্রমিকরাও এ প্রতিশ্রুতিতে আবারও কাজে ফিরেছে।
এদিকে শ্রমিকদের দাবির মধ্যে রয়েছে- সরকারের ঘোষিত সরকারের দেয়া শ্রমিকদের ন্যায্য ছুটি মঞ্জুর করা, হাজিরা বোনাস ও অতিরিক্ত কাজের জন্য বোনাস প্রদান, নির্ধারিত দিনে বেতন-ভাতা প্রদান ও শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দেয়া।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিক আক্কাস আলী জানায়, প্রত্যেক মাসেই বেতন-ভাতা নির্ধারিত দিনে দেয়া হয় না। ডিসেম্বরসহ ৪ মাসের বেতন বকেয়া। স্ত্রী-সন্তানদের উপোস রেখে নিজেরা না খেয়ে কাজ করতে হচ্ছে। কাজে না আসলে আবার চাকুরী থাকবে না। আমরা অমানবিক নির্যাতনের শিকার।
মিলের ইসন্ডার বিভাগের মো. শহিদুল্লাহ জানান, পকেটে টাকা নাই, পেটে খাবার নেই। ঘরে স্ত্রী-সন্তানও না খেয়ে দিন পার করছে। কাজ করেও বেতন পাচ্ছিনা। এর অবসান চাই।
ফ্ল্যাট ডেস্কের আব্দুল মোতালেব বলেন, শ্রমিকদের খাবারের নির্ধারিত সুযোগ সুবিধা নেই, সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নেই।
আরেক শ্রমিক জানায়, কথা বললেই চাকুরী চলে যায়। অন্যথায় শ্রমিকদেরকে স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে নির্যাতন-নিপীড়ন করা হয়।
শ্রমিক আব্দুল হান্নান জানায়, শ্রম অধিদপ্তরের লোকজন এসে এসিরুমে বসেন, তারা সেখান থেকেই বিদায় নেন। আমাদের শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য নয়; উনারা আসেন মালিকদের সুবিধা দিতে আর নিতে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা টেক্সটাইল মিলের এডমিন (প্রশাসন) মো. কামরুল হাসান বলেন, বিশ^ পরিস্থিতির কারণে শ্রমিকদের বেতন বকেয়া পড়েছে। এ মিলে মাত্র ১৫ দিন হলো যোগদান করেছি। শ্রমিকদের অন্যান্য দাবিগুলোও দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করা হবে।
মিলের ম্যানেজার (ভারপ্রাপ্ত) রবিন হাওলাদার জানান, শ্রমিক ও প্রশাসনের সঙ্গে বকেয়া বেতন পরিশোধের বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে। আন্দোলনের দায়ে কোনো শ্রমিক চাকুরিচ্যূত হবেন না-এটাই প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।
গৌরীপুর থানার সাব-ইন্সপেক্টর মো. শফিকুল ইসলাম মিল মালিক, প্রশাসন ও শ্রমিকদের সঙ্গে সমঝোতা করেন এবং আন্দোলনকারী শ্রমিকদের চাকুরিচ্যূত করা হবে না মর্মে আশ্বস্ত করেন।