মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) সংবাদদাতা : হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজাকে ঘিরে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের মন্ডপগুলোতে সাজ সাজ রব। একই মন্ডপে ১৫১ প্রতিমা। ৭৬টি মন্দিরে দেবী দূর্গা সেজেছেন অপরূপ সাজে। এ উৎসবকে ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নসহ পৌর শহরে এবারে ৭৬টি মন্দিরে শারদীয় দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ দূর্গাপূজাকে ঘিরে ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসন আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষার্থে প্রতিটি মন্দিরের সভাপতি সম্পাদকসহ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃৃন্দের সাথে পৃথক পৃথক সভা করেছেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের এ বড় উৎসবকে ঘিরে এখন মন্ডপে মন্ডপে চলছে ডেকোরেশন ও আলোকসজ্জার কাজ। প্রতিমা তৈরীর শিল্পীরা মাটির কাজ শেষে রংতুলির কাজে ব্যস্ত। ষষ্ঠী পূজা থেকে দশমী পর্যন্ত ৫ দিনব্যাপী চলবে এ দূর্গোৎসব। মূলত মহালয়ার দিন থেকেই দেবী দূর্গার আগমন বার্তা মর্ত্যলোকে শুরু হয়। এবারে মা দেবী দূর্গার আগমন ও গমন হবে ঘোটকে।
এদিকে এ উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ১৫টি মন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে শ্রীপুর, জয়পুর দূর্গামন্দিরে দেবী দূর্গাসহ বিভিন্ন দেব-দেবীর ১৫১ প্রতিমা তৈরী করা হয়েছে। এ খবর শুনে দূর-দুরান্ত থেকে লোকজন মন্দিরে প্রতিমা দেখার জন্য প্রতিনিয়ত ছুটে আসছেন।
মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক বিকাশ চন্দ্র সাহা, সদস্য নিত্যানন্দ চক্রবর্তী, অংকুর সাহাসহ মন্দির কমিটির দায়িত্বে থাকা একাধিক ব্যক্তি বলেন, গতবছর দূর্গাপূজায় ১০১টি প্রতিমা তৈরী করা হয়েছিলো। এবার ১৫১টি প্রতিমা তৈরী করা হয়েছে। শারদীয় দূর্গোৎসবে এ উপজেলার আশেপাশের ইউনিয়নের গ্রাম থেকে শুধু নয় পার্শ্ববর্তী জেলা পিরোজপুর, ইন্দুরকানি, ঝালকাঠি, বরিশাল এছাড়া জেলা শহর বাগেরহাট সদরসহ চিতলমারী, মোল্লাহাট, ফকিরহাটসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার ভক্ত ও পূজারীদের সমাগম ঘটে এ মন্দিরে।
বনগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান রিপন চন্দ্র দাস বলেন, এ ইউনিয়নে হিন্দু সম্প্রদায়ের বসবাস বেশি। দূর্গাপূজাকে ঘিরে প্রতিটি বাড়িতেই উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। শ্রীপুর জয়পুর দূর্গামন্দিরে ১৫১টি প্রতিমার পূজা বাহিরে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। মন্দিরগুলোতে নিরাপত্তার জন্য ২০ সদস্যের স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করে ২৪ ঘন্টা পাহারার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম তারেক সুলতান বলেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দূর্গোৎসবকে ঘিরে গোটা উপজেলা এখন উৎসবমুখর। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। মন্ডপের নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা, পুলিশ, গ্রাম পুলিশ, আনসার, ভিডিপি ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করে পাহারার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিটি মন্ডপে সরকারী বরাদ্দকৃত চাল আগামী সপ্তাহে বিতরণ করা হবে।