মুকসুদপুর (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় ইউনিয়ন পরিষদের প্রয়াত চেয়ারম্যান স্বর্গীয় বাবু মিহির কান্তি রায় এর বিরুদ্ধে কটূক্তি করায় কঠোরভাবে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে গত ১৬ জুন শুক্রবার বেলা ১১টায় নিজ বাড়ীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার সহধর্মিণী শেফালী রায়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রয়াত মিহির কান্তি রায়ের সহধর্মিণী শেফালী রায় কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার প্রয়াত স্বামী স্বার্গীয় মিহির কান্তি রায়ের বিরুদ্ধে পাক্ষিক মুকসুদপুর সংবাদসহ জাতীয় ও স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মুকসুদপুর উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক দেখিয়ে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করেছে। আমার স্বর্গীয় স্বামী কখনও বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না। প্রকৃতপক্ষে আমার স্বামী মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয় ছিলেন। বিগত স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমার স্বামী চেয়ারম্যান পদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। ব্যাপক জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। এরপর ইউনিয়নের জনগণের ভালোবাসায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর পর আমাদের বাড়ীতে মুকসুদপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ কাবির মিয়া, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম ইমাম রাজী টুলু স্যারসহ মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ- সভাপতি শ্যামল কান্তি বোস, সাধারণ সম্পাদক সাহিদুর রহমান টুটুল, যুগ্ম সম্পাদক এম এম মহিউদ্দীন আহম্মেদ মুক্তু মুন্সী এবং স্থানীয় পর্যায়ের আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সমবেদনা জানাতে এসেছিলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার স্বর্গীয় স্বামীর মৃত্যুর পর তার রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ইউনিয়নের জনগণ আমাকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে দেখার আগ্রহী প্রকাশ করেছেন। ইউনিয়নের জনগণ প্রার্থী হিসেবে আমাকে দেখার আগ্রহী প্রকাশ করায় আমার এবং আমার স্বর্গীয় স্বামীর ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে একটি কুচক্রী মহল সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ এনেছেন। জলিরপাড় ইউনিয়ন পরিষদে দুইবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান স্বর্গীয় মিহির কান্তি রায়ের রাজনৈতিক ইমেজকে নষ্ট করার লক্ষ্যে তার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত মানহানিকর ও অসত্য অভিযোগ তুলে ধরে সংবাদ প্রকাশ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই মিথ্যা অভিযোগগুলো করা হচ্ছে। আমি যাতে ভয়ে জলিরপাড় ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন না করি সেজন্য মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন প্রপাকান্ড চালানো হচ্ছে।
শেফালী রায় আরো বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের পরিচালক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা, রাজনৈতিক ব্যক্তি, মুকসুদপুর উপজেলার দুস্থ, অসহায় ও দরিদ্র মানুষের মাঝে প্রতিনিয়ত সাহায্যকারী খোন্দকার মনজুরুল হক লাভলু ভাই আমার স্বর্গীয় স্বামীর মৃত্যুর পর তার প্রতি শ্রদ্ধা এবং আমার ও আমার একমাত্র মাসুম বাচ্চাকে সমবেদনা জানাতে আমাদের বাড়ীতে এসেছিলেন। খোন্দকার মনজুরুল হক লাভলু ভাই আমাদের বাড়ীতে আসার পর হতে একটি কুচক্রী মহল মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন প্রপাকান্ড চালিয়ে আমার এবং আমাদের পরিবারের মান সম্মান ক্ষুন্ন করেছে। আমি এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
মুকসুদপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ কাবির মিয়া বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মুকসুদপুর উপজেলাসহ গোপালগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলায় দলীয় মনোনয়ন বা দলীয় প্রতীকে দেননি। দলীয় মনোনয়ন থেকে গোপালগঞ্জ জেলাকে উন্মুক্ত রেখেছিলেন। আমি ওই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময়ে আমার বিরুদ্ধেও স্বার্থান্বেষী কিছু নেতা নানা প্রকার অপপ্রচার চালিয়েছিলেন। কিন্তু উপজেলার জনগণের ভালোবাসায় আমি বিপুল ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে আজ জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। মিহির কান্তি রায়ের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। মুকসুদপুর উপজেলার কৃতিসন্তান গরীবের বন্ধু খোন্দকার মনজুরুল হক লাভলু ভাইকে নিয়ে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। সংবাদ সম্মেলনে জলিরপাড় ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিকাশ বাকচীসহ ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও গোপালগঞ্জ জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকগণ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।