মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
এবার নেত্রকোনার মদন উপজেলায় মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে সোনালি ধান আমন। কৃষকরা ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। গত বছরের তুলনায় এবার ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। দামও ভালো। ফলে খুশি কৃষকরা। তবে কৃষকেরা জানিয়েছেন, বন্যার পানি দ্রুত নেমে যাওয়ার কারণে গতবারের চেয়ে বেশি আমন জমি চাষ করতে পেরেছেন। ফলনও ভাল হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন হাওর ঘুরে দেখা যায়, দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠ। হেমন্তের মিষ্টি বাতাসে দোল খাচ্ছে আমনের সোনালি শীষ। সোনালি ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষক। কেউ আঁটি বেঁধে ধানের বোঝা কাঁধে করে, কেউ ভ্যানে আবার কেউ গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এই মৌসুমে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। তবে আমন চাষ করা হয়েছে ১০ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। শতকর ৩৫ ভাগ জমির ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের ফলন হয়েছে হেক্টর প্রতি সাড়ে ৫ মেট্রিক টন। তবে চলতি মৌসুমে কৃষি বিভাগ তৎপর থাকায় রোগবালাই নেই বললেই চলে। গত বছর ছিল ৯ হাজার ৭০০ হেক্টর।
তিয়শ্রী ইউনিয়নের সাইতপুর গ্রামের কৃষক তরুণ সরকার, মফিজুল হক মল্লিক, বাঘমারা গ্রামের কৃষক শ্যামল তালুকদার বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার বৃষ্টি না থাকায় আমন চাষে খরচ কিছুটা বেড়েছে। তবে ধানের বাজার ভালো থাকায় লাভবান হতে পারব।
একই এলাকার কৃষক ফতেপুর গ্রামের আব্দুল জব্বার, ইঞ্জিল খান, হামিদ চৌধুরী আলী বলেন, কীটনাশকের দাম বাড়লেও এবার আমন ধানের পোকার আক্রমণ ছিল না। তাই এবার ধানে কীটনাশক স্প্রে করতে হয়েছে ২-৩ বার। আর অন্যান্যবার পোকা-মাকড় বেশি হওয়ায় কীটনাশক স্প্রে করতে হয় প্রায় ৫-৬ বার। এবার ধানে পোকা-মাকড় কম হওয়ায় স্প্রে কম করতে হয়েছে ও ধানের ফলনও হয়েছে ভালো। আমরা প্রতি বছর আমন মৌসুমে ব্রি ২২, ৩২, ৩৯ ধান বেশি চাষ করি। এবছরও এ জাতের ধান চাষ করে কাঠা প্রতি ৩-৪ মণ ধান বেশি পেয়েছি। ধান বিক্রি করতে পারছি ১২শ থেকে ১৩৫০ টাকা। কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন দিয়ে সহজে ধান কাটতে পারছি।
উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, এ বছর আমন মৌসুমের শুরুতেই বৃষ্টি কম ছিল। এতে কৃষকের সাময়িক সমস্যা হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও মাঠে খুব ভালো ফলন হয়েছে। ধানের বর্তমান বাজারদরও ভালো। কৃষকরা সহজেই কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন দিয়ে অল্প খরচে সহজেই ধান কাটতে পারছে। এতে কৃষকেরা উৎসবমুখর পরিবেশে ধান কাটছে।