তোফাজ্জল হোসেন, নরসিংদী প্রতিনিধি
নরসিংদী জেলা শহরের ভেলানগর মহল্লার পল্লী চিকিৎসক অর্জুন কুমার দাস আর আমাদের মাঝে নেই। তিনি গত ৭ জুলাই রাতে ঢাকাস্থ এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। গত ২৭ জুন তিনি স্ট্রোক করলে তাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকাস্থ এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়লে তার অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। গত মঙ্গলবার রাতে তিনি ইহ জগতের মায়া কাটিয়ে পরলোকে গমন করেন। তার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, হঠাৎ তিনি স্ট্রোক করলে তাকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এরপর তাকে আইসিইউতে চিকিৎসা দেয়া হয়। এতেও তার অবস্থার উন্নতি না হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে ভর্তি করা হয়। ডাঃ অর্জুন কুমার দাস বাংলাদেশ পল্লী চিকিৎসক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাধারন সম্পাদক, নরসিংদী জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক, নরসিংদী জেলা ন্যাপের সহ সভাপতি, ভেলানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। কেন্দ্রীয় ন্যাপের নেতৃবৃন্দ, নরসিংদী জেলা ন্যাপের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষাবিদ আতাউর রহমান, ভেলানগর বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ পল্লী চিকিৎসক সমিতির সভাপতি ডাঃ সবুজ আলী, নরসিংদী জেলা পল্লী চিকিৎসক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ, সাপ্তাহিক খবর পরিবার তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। গত বুধবার দুপুর ২ টায় অর্জুন কুমার দাসের লাশ নরসিংদী এসে পৌঁছে। বিকাল ৩টায় তার লাশের সৎকার কাজের জন্য দত্তপাড়া শ্মশানঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নরসিংদী জেলা প্রশাসনের কুইক রেসপন্স টিম তার লাশ সৎকার কাজ সম্পন্ন করেন। কুইক রেসপন্স টিম প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন নরসিংদী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রইছ আল-রেজুয়ান। এ সময় লাশ সৎকার কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ১ ছেলে, ১ মেয়ে, আত্মীয়স্বজন ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বৎসর। অর্জুন কুমার দাসের মৃত্যুতে তার রুহের সৎগতি কামনা করে তার পরিবারের পক্ষ থেকে সকলের নিকট প্রার্থনার অনুরোধ জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, ডাঃ অর্জুন কুমার দাসের পিতা সুরেশ চন্দ্র দাসের মৃত্যুর পর অত্যন্ত দক্ষতার সাথে এলাকাবাসীকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছিলেন। প্রতিদিনই তার চেম্বারে থাকত রোগীর ভিড়। এলাকায় সৎ, নিষ্ঠাবান এবং একজন সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে তার ব্যাপক সুনাম রয়েছে। তিনি গরীব রোগীদের বিনা পয়সায় চিকিৎসা সেবা দিতেন। ভেলানগর, বিলাসদী, বাসাইল, কারারচর, সৈয়দনগরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে উনার নিকট রোগী আসতেন। চিকিৎসার ক্ষেত্রে তার হাতযশ ছিল এটাই তার প্রমাণ। তার মৃত্যুতে ভেলানগরবাসী একজন নিবেদিত প্রাণ চিকিৎসককে হারাল যা পূরণ হবার নয়।