চৌহালী সিরাজগঞ্জ : “নারীর জন্য বিনিয়োগ, সহিংসতা প্রতিরোধ” এ প্রতিপাদ্যকে ধারন করে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও “জয়িতা উন্মেষণে বাংলাদেশ” শির্ষক কার্যক্রমের আওতায় সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে র্যালী, আলোচনা সভা ও জয়িতাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৩ উপলক্ষে উপজেলা পর্যায়ে সমাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় চৌহালীতে পাঁচ নারী হলেন শ্রেষ্ঠ জয়িতা স্বীকৃতি সম্মাননা।
৯ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া দিবস। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করেন চৌহালী উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর।
গতকাল (৯ডিসেম্বর)শনিবার সকালে উপজেলা পরিষদ হলরুমে ইউএনও মাহবুব হাসান এর সভাপতিত্বে ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসার শামীম জাহিদ তালুকদার এর পরিচালনায় বেগম রোকেয়া দিবসে আলোচনা সভা, র্যালী ও জয়িতা সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
জয়িতা অন্বেষণে বিশেষ সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের শ্রষ্ঠ জয়িতা সম্মননা পুরস্কার তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব হাসান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, চৌহালী থানা অফিসার ইনচার্জ হারুন অর রশিদ, সহকারী কৃষি অফিসার মোবারক হোসেন, আনসার ভিডিপির অফিসার বছিউদ্দিন, ব্র্যাক চৌহালী শাখার সামাজিক ক্ষমতায় ও আইনী সুরক্ষা কর্মসূচী অফিসার মোঃ আবু দাউদ, বিশিষ্ট সাংবাদিক মাহমুদুল হাসান, চৌহালী প্রেসক্লাবের সভাপতি মো, ইদ্রিস আলী, এনায়েতপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো রফিক মোল্লা, পিওটিভি রুবিয়া খাতুন প্রমুখ।
নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যামে জীবন শুরু করেছেন বৈন্যা গ্রামের আমিনা, সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন কোদালিয়া পশ্চিম পারা গ্রামের রহিমা খাতুন, অর্থনৈতিক ভাবে সাফল্য অর্জনকারি নারী খাষপুখুরিয়া দক্ষিণ পারা গ্রামের নাজমা খাতুন, শিক্ষা ও চাকুরি ক্ষেত্রে অবদান রাখেন খাষকাউলিয়া গ্রামের ফারজানা সুলতানা, সফল জননী খাষপুখুরিয়া উত্তর পারা গ্রামের ফজিলা খাতুন।
কৃষি অফিসার মোবারক হোসেন বলেন,
বৈষম্যহীন ও সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে বেগম রোকেয়ার জীবনাদর্শ ও নারী শিক্ষার প্রসারে তার অবদান আমাদের নারী সমাজের অগ্রযাত্রায় এক অন্তহীন প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসার শামীম জাহিদ তালুকদার বক্তব্যে বলেন, বেগম রোকেয়া ২০০৪সালে বিবিসি বাংলার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি,জরিপে ষষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি প্রাবন্ধিক,ঔপন্যাসিক,সাহিৎেযিক ও সমাজ সংস্করক হিসেবে পরিচিত। তার উল্লেখযোগ্য রচনা হলো: মতিচুর,সুলতানার স্বপ্ন, পদ্মরাগ, অনরোধ- বাসিনী। ২৯৬৩ সালে বেগম রোকেয়া নামে প্রথম কলেজ স্থাপন করা হয়। ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম ছাত্রী হলের নামকরণ করা হয় তার নামঅনুসারে। ২০০৯ সালে রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে’বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়’করা হয়। বেগম রোকেয়া দিবসটি সরকারি ভাবে পালিত একটি জাতীয় দিবস।
ইউএনও মাহবুব হাসান বলেন, বাঙালি মুসলমান সমাজের এই যে নারী-পুরুষের অসঙ্গতি: এর বিরুদ্ধে প্রথম যে কণ্ঠটি আওয়াজ তুলেছিলেন সেটি বেগম রোকেয়া। নারী জাগরণ ও স্বাধীনতার পক্ষে প্রথম প্রতিবাদি কণ্ঠস্বরও বেগম রোকেয়াকেই আমারা গণ্য করতে পারি। তিনি বাঙালি মুসলমানদের নব জাগরণের সূচনালগ্নে নারী শিক্ষা ও নারী জাগরণের নেতৃত্ব দেন। বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠা পুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। সে সময়ে মুসলিম সমাজে মেয়েদের পড়াশোনা শেখানোর কোনপ প্রচলন ছিল না। তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও পরিবারের সবার অগোচরে তার বড় ভাই এর
কাছে উর্দু, নাংলা, আরবি, ও ফারসি পড়তে ও লিখতে শিখেন। তার জীবনে শিক্ষা লাভ ও মুল্যবোধ গঠনে তার ভাই ও বোন উল্লেখযোগ্য ভুমিকা পালন করছেন। পরে বিহারের ভাগলপুরে সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয়। স্বামীর উৎসাহে ও নিজের আগ্রহ নিয়ে তিনি লেখা পড়ার প্রসার ঘটান। বেগম রোকেয়া ২৯৩২ সালের ৯ডিসেম্বর মা-রা যা-ন।
এছাড়াও নারীদের বিভিন্ন শিক্ষা সহ নানা সমস্যা সমাধান নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন।