বেগমগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বসতঘর থেকে চুরি হওয়ার সাতদিন পর নগদ ১৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকাসহ স্থানীয় এক সালিশদারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজান (৪২) উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ শরীফপুর গ্রামের সবুজ চেয়ারম্যান বাড়ির মৃত হাজী ইব্রাহীমের ছেলে। গত শনিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ শরীফপুর গ্রাম থেকে অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করে বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৩ ডিসেম্বর শুক্রবার রাতে খাবারের সাথে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে বেগমগঞ্জ উপজেলার ১৫নং শরীফপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ শরীফ গ্রামের মাহমুদ উল্যা মিয়া বাড়ির ফজলুল হকের ঘরে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। ওইসময় চোরচক্র স্টীলের আলমারি খুলে ড্রয়ারে থাকা নগদ ২৬ লাখ টাকা ও ৯ জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, ১টি নেকলেস, ৫টি আংটি, ১টি গলার চেইনসহ এনআইডি কার্ড, জমির দলিলপত্র, ব্যাংকের চেকবহি এবং মূল্যবান কাগজপত্র চুরি করে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় গত ২৬ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী মো. ফজলুল হক (৩০) বাদী হয়ে এজাহার দায়ের করেন। মামলার তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, গ্রেফতারকৃত আসামি মিজান বাদীপক্ষের প্রতিবেশি এবং বাদীর বাড়ির বিভিন্ন ছোট খাট বিষয়ের সালিশ মীমাংসাকারী। সে বাদীর বাড়িতে সবসময় যাতায়াত করত এবং বাড়ির সকল বিষয়ে সে জানত। বাদীপক্ষ বিভিন্ন সময়ে পর্যায়ক্রমে উল্লেখিত ২৬ লাখ টাকা তার ঘরে রাখে। পরবর্তীতে সে ২৬ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার চুরির বিষয়ে নিজে পরিকল্পনা করে। মামলার তদন্তকালে আসামির সংশ্লিষ্ট বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়ার পর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, একপর্যায়ে পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে চুরি যাওয়া টাকা এবং স্বর্ণালঙ্কার তার পার্শ্ববর্তী রাজু আহম্মদের ঘরে তোষকের নিচে রাখে (উক্ত ঘরে কেউ থাকে না ঘরটি তালাবদ্ধ থাকে) বলে জানায়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজু আহম্মদের বসতঘরে তল্লাশী করে আসামি মিজানের দেখানো মতে বসতঘরে ভিতরে থাকা খাটের তোষকের নিচে একটি শপিং ব্যাগে রক্ষিত ১৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা এবং একটি প্লাস্টিকের কৌটায় রক্ষিত মোট ১ ভরি ১ আনা ১ রতি স্বর্ণ (কানের দুল ১ জোড়া, টব ১ জোড়া, নাকের নথ ১টি, বেবী আংটি ১টি, নাক ফুল ৬টি, গলার চেইন ১টি) উদ্ধার করা হয়। তার তথ্যের ভিতিতে বসতঘরের পশ্চিম পাশের পুকুর থেকে বাদী যে ট্রাঙ্কে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা রেখেছিল সে ট্রাঙ্কটি তার দেখানো মতে উদ্ধার করা হয়।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, এই ঘটনায় পুলিশের তদন্ত অব্যাহত আছে।