একেএম বজলুর রহমান, পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
দেশের অন্যতম চার দেশীয় স্থলবন্দর তেতুলিয়ার বাংলাবান্ধায় বিভিন্ন যানবাহনের চালক-হেলপারদের করোনা ভাইরাসের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সোমবার (১০ মার্চ) দুপুর থেকে হ্যান্ড থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে জিরো পয়েন্টে মেডিকেল ক্যাম্প বসিয়ে ট্রাকের চালক ও হেলপারদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এর আগে, গত ২৮ জানুয়ারি থেকে স্থলবন্দরটিতে এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার পাসপোর্টধারী পর্যটকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। যদিও এখন পর্যন্ত কারও শরীরে করোনার কোনো উপসর্গ পাওয়া যায়নি। তবে সম্প্রতি ভারতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় বন্দরটির সর্বত্র জনমনে তৈরি হয় আতঙ্ক। আর তাই স্থানীয় এলাকাবাসী ও বন্দরের ব্যবসায়ীরা ইমিগ্রেশন পাসপোর্ট যাত্রীদের পাশাপাশি সকল যানবাহনের চালক-হেলপারদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এ দিকে দেশে ৩ জনের করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের লক্ষ্যে গত সোমবার বিকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা কমিটির দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিভিল সার্জনের কার্যালয় কর্তৃক আয়োজিত এ সভায় জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন সভাপতিত্বে নেওয়া হয় বিভিন্ন কর্মসূচি। সভায় লিফলেট বিতরণ ও হাত ধোয়া কর্মসূচি গ্রহণ। এছাড়া বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে যাত্রী সাধারণ ও ট্রাক চালক এবং সাহায্যকারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু বিষয়ে সাংবাদিকদের অবগত করা হয়। এছাড়া করোনা মোকাবিলায় জেলা আধুনিক সদর হাসপাতালের চার তলায় পাঁচ শয্যা বিশিষ্ট একটি আইসোলেশন ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে। কারও শরীরে করোনার উপসর্গ পাওয়া গেলে প্রাথমিকভাবে তাকে এ আইসোলেশন ইউনিটে রাখা হবে। সেখান থেকে তাকে ঢাকায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটে (আইইডিসিআর) পাঠানো হবে এমনটি জানানো হয়। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান এই চারটি দেশের সাথে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ছাড়াও ব্যবসা-বাণিজ্যে অন্যতম ব্যস্ততম স্থলবন্দর এটি। প্রতিদিন পাসপোর্টধারী যাত্রী আর ব্যবসা-বাণিজ্যে পাথরসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি-রপ্তানি করা হয়ে থাকে এ বন্দর দিয়ে। চীনে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের থাবার পর দেশের অন্যান্য স্থলবন্দরের ন্যায় বাংলাবান্ধায় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় মেডিকেল টিম বসানোর। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে গত ২৮ জানুয়ারি হতে ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের কার্যালয়ের একটি কক্ষে করোনা শনাক্তে মেডিকেল টিম স্থাপন করা হয়। দুই শিফটে ১ জন মেডিকেল অফিসার, ১ জন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার ও ১ জন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সহকারী মেডিকেল টিম মৌখিক জিজ্ঞাসাবাদ ও থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে শুধু পাসপোর্টধারী যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে আসছিলেন। এ স্থলবন্দরের ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজে নিয়োজিত বিভিন্ন যানবাহনের ড্রাইভার ও হেল্পারদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করায় দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন বন্দরের সচেতন নাগরিক ও সাধারণ ব্যবসায়ীরা। অবশেষে সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর সোমবার (৯ মার্চ) থেকে চালক-হেলপারদের করোনা পরীক্ষায় মেডিকেল টিম বসানোয় স্বস্থি প্রকাশ করছেন তারা।