গোলাম হায়দার, বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনার আমতলী-কলাপাড়া সড়কের ছুরিকাটা সৈকত ফিলিং ষ্টেশনের সামনে গতকাল শনিবার বেলা ১২টার দিকে বাস ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল চালক খলিলুর রহমান চৌকিদার নিহত ও ১০ জন বাস যাত্রী আহত হয়েছে। গুরুতর আহত তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোটরসাইকেল চালক খলিলুর রহমান সৈকত ফিলিং ষ্টেশন থেকে গাড়ীতে পেট্রোল ভরে সড়কে উঠছিল। এসময় কুয়াকাটা থেকে ছেড়ে আসা দ্রুত গতির ইউনা ক্লাসিক বাসের (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-০৩৫৯) সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। বাস নিচে পড়ে মোটরসাইকেল দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি নারিকেল গাছের সাথে ধাক্কা লেগে সামনের অংশ ভেঙ্গে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল চালক খলিলুর রহমান চৌকিদার (৪০) নিহত এবং বাসে থাকা ১০ জন যাত্রী আহত হয়। গুরুতর আহত আমির হোসেন জোমাদ্দার, মিরাজ মুন্সি, জুয়েল মিয়া, আকলিমা বেগম, মাকসুদা আক্তার, শিশু নাকিব হোসেনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সুমন খন্দকার গুরুতর আহত আমিন উদ্দিন জোমাদ্দার, মিরাজ মুন্সি ও জুয়েলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। অপর আহতদের আমতলী হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। খবর পেয়ে আমতলী থানা ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদারসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় বাসের কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার পরপরই বাসের চালক, হেল্পার ও সুপার ভাইজার পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘাতক বাসটি আটক করেছে। পুলিশ মোটর সাইকেল চালক খলিলের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। নিহত খলিলের বাড়ী কলাপাড়া উপজেলার চম্পাপুর ইউনিয়নের কানাইমৃধা গ্রামে। তার বাবার নাম মোঃ মোতালেব চৌকিদার। খবর পেয়ে স্বজনরা আমতলী হাসপাতালে আসে। স্বজনদের আহাজারিতে আমতলী হাসপাতাল প্রাঙ্গণে এক হৃদয় বিদারক অবস্থার সৃষ্টি হয়। বাসযাত্রী নাভিল হোসেন বলেন, অন্তত ৩০-৩৫ জন যাত্রী নিয়ে ইউনা ক্লাসিক বাসটি কুয়াকাটা থেকে পটুয়াখালী যাচ্ছিল। আমতলী সৈকত ফিলিং ষ্টেশনের সামনে আসলেই যাত্রীবাহী বাসটি একটি মোটর সাইকেলের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে একটি নারিকেল গাছের সাথে ধাক্কা লাগে। এতে বাসটির সামনের অংশ ভেঙ্গে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে মোটর সাইকেল চালক নিহত ও বাসের অন্তত ১০ জন যাত্রী আহত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, মোটরসাইকেলটি আমতলী সৈকল ফিলিং ষ্টেশন থেকে পেট্রোল নিয়ে সড়কে উঠার সাথে সাথেই বাসটি মোটর সাইকেলের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মোটর সাইকেলটি বাসের নিচে পড়ে পিষ্ট হয় এবং বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সাথে ধাক্কা লেগে সামনের অংশ ভেঙ্গে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ সুমন খন্দকার বলেন, মোটর সাইকেল চালক খলিলুর রহমান হাসপাতালে আনার পূর্বেই মারা গেছেন। গুরুতর আহত তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপর আহতদের যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়। আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ হেলাল উদ্দিন বলেন, মোটর সাইকেল চালক খলিলুর রহমানের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। বাসটি আটক করা হয়।