সৈয়দ মনির আহমদ : ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরশুরাম মডেল সরকারি পাইলট হাই স্কুলে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণি কক্ষে চলছে পাঠদান। সোমবার সকালে বৃষ্টি চলাকালে দেখাযায় ঝুঁকিপূর্ণ টিনশেডে শিক্ষার্থীদের মাথায় ছাতা। বৃষ্টি হলে এভাবে শ্রেনী কার্যক্রম চলে। জানাগেছে, যে সকল ছাত্র-ছাত্রীর ছাতা নেই তারা যতক্ষণ বৃষ্টির পানি পড়ে, ততক্ষণ বৃষ্টিতে ভিজে ক্লাস করতে হয়। বই খাতা বৃষ্টিতে ভিজে যায়, বিঘ্নিত হয় পাঠদান। এই টিনশেডে অষ্টম শ্রেণির একটি শাখার শ্রেনীর কার্যক্রম চলে। অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র মোঃ ফয়সাল বলেন, আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করতেছি। বৃষ্টি আসলে ছাতা মাথায় দিয়ে ক্লাস করতে হয়। শ্রেণি কক্ষের সংকট থাকায় ১৮০জন ছাত্র-ছাত্রী ঝুঁকি নিয়ে এখনে ক্লাস করতে হয়। এছাড়া পরশুরাম সরকারি মডেল পাইলট হাই স্কুল এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয় এটি। প্রতিবছর প্রায় ১৫০০ ছাত্র-ছাত্রী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে। এই ঝুঁকিপূর্ণ টিনশেডে যেকোনো সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। পরশুরাম উপজেলায় প্রতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে শীর্ষস্থানে ফলাফল অর্জন করে পরশুরাম মডেল সরকারি পাইলট হাই স্কুল। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২২ এ এসএসসি পরীক্ষায় ১৭৪ জন শিক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করে। ১৫১ জন সফলতা অর্জন করে, এরমধ্যে ৩১ জন এ+ পেয়েছে। যা পরশুরাম উপজেলা পর্যায়ে শীর্ষে।
পরশুরাম সরকারি মডেল পাইলট হাই স্কুলে প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান চৌধুরী প্রতিবেদককে জানান, উপজেলা সদরে ১৯৪৫ সালে এই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এমন পরিবেশ কোথাও আছে আমার মনে হয় না। বিশিষ্ট সমাজসেবক শিক্ষা অনুরাগী প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমকে জরাজীর্ণ এই টিনশেডটি প্রত্যক্ষভাবে দেখানো হয়েছে। এই ঝুঁকিপূর্ণ টিনশেড দেখে খুবই দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, পরশুরাম সদর স্কুল দেখে মনে হচ্ছে যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত একটি এলাকার স্কুল। তিনি সাথে সাথে ফেনী-১ আসনের সাংসদ শিরীন আখতারকে ফোন দিয়ে পরশুরাম উপজেলা প্রাণকেন্দ্রে সুনাম ধন্য ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থা অবহিত করেন। কিন্তু সংসদ সদস্য শিরীন আখতার প্রতিশ্রুতি দিলেও আজ পর্যন্ত কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, পূর্ব পাশে দুতলা ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসককে জানালে তিনি ডিজি বরাবরে আবেদন করার জন্য বলেন। আবেদন করার পরে ডিসিকে সুপারিশ করেন কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে ফেনী-১ আসনের সাংসদ শিরীন আখতার জানান, এই ভবন বরাদ্দের জন্য সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত বরাদ্দ আসবে। আমি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।