ফেনী প্রতিনিধি : ফেনীর সোনাগাজী উপজেলাতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামি আবদুল আজিজকে আজ শনিবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আর উদ্ধার করা আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পুলিশ ঢাকায় বোমা বিশেষজ্ঞ দল এবং সিআইডির বোমা বিস্ফোরক দলকে জানিয়েছে।
গতকাল দুপুরে ফেনীর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব বিষয় জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন। এ সময় সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মু. খালেদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের আড়কাইম গ্রামে একটি বাড়িতে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আবদুল্লাহ আল নোমান (১৯) আড়কাইম গ্রামে নানার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বন্ধু আবদুল আজিজের (২১) ঘরে বসে ইউটিউব দেখে নোমান বোমা তৈরির চেষ্টা করছিলেন।
এ সময় হঠাৎ বিকট শব্দে পুরো বাড়ি কেঁপে ওঠে। বিস্ফোরণে নোমানের বাঁ হাতের কবজি উড়ে যায়। আবদুল আজিজও সামান্য আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন নোমানকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। ঘটনার পর আজিজ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় দাগনভূঞা উপজেলার ফাজিলের ঘাট এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার সকালে সোনাগাজী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামাল উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
বিস্ফোরণের ঘটনা সম্পর্কে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, তাঁদের ধারণা, ওই সময় কক্ষে বোমাজাতীয় কিছু তৈরি করা হচ্ছিল। এ ঘটনায় আবদুল আজিজ ও আবদুল্লাহ আল নোমানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। আজিজকে আদালতে পাঠিয়ে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে এবং নোমান ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, নোমান সুস্থ হলে তাঁকেও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। মামলায় আজিজ ও নোমান ছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয় তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ সময় ঘরের ওই কক্ষে বিস্ফোরিত বোমার কিছু অংশ, লাল রঙের স্কচটেপ ও চিকন রশি ছিল। কিছু কাচের টুকরা, স্ক্রু, নাট, তিনটি ছোট ও মাঝারি ব্যাটারি, একটি কাটার, তিনটি পুরোনো মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। উদ্ধারকৃত আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকায় বোমা বিশেষজ্ঞ দল এবং সিআইডির বোমা বিস্ফোরক দলকে জানানো হয়েছে। আসামিদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় এখনো জানা যায়নি।