ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে রিপা বেগম (২৫) নামের এক গৃহবধূকে নির্যাতন করে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। রিপার লাশ হাসপাতালে রেখে তার স্বামী ও শাশুড়ি পালিয়ে গেছে বলে দাবী নিহতের পরিবারের।
এদিকে সালথায় মায়ের ওপর অভিমান করে বাবার মাফলার গলায় পেঁচিয়ে শাহেলা আক্তার (৯) নামে এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে।
স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা যায়, নির্যাতনের শিকার নিহত গৃহবধু রিপা বেগমের স্বামী রুপাপাত ইউনিয়নের সূর্য্যক গ্রামের মো. মাহবুর শেখ। মাহবুর ও তার মা ওই গৃহবধূর সাথে প্রায় ঝগড়া করে মারধর করতো। কিছুদিন আগেও মারধর করে ওই গৃহবধূকে তার বাবার বাড়ি থেকে নগদ টাকা ও একটি ছাগল আনতে বাধ্য করেন।
গৃহবধূর মা-বাবা অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়েকে তার স্বামী ও শাশুড়ি প্রায়শই মারধর করে টাকা-পয়সা আনতে বাধ্য করতো। কিছুদিন আগেও টাকা ও ছাগল দিয়ে ওর শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়েছিলাম। আমার মেয়ের সাথে ওর স্বামী ও শাশুড়ি ঝগড়া করে তাকে মারধর করে। এসময় তার পেটে লাথি মেরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় স্বামী ও শাশুড়ি আমার মেয়েকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে মিথ্যা অভিনয় করে ডাক্তারকে বলেন বিষ পান করেছে। ডাক্তার আসার আগে আমার মেয়ে মারা যায়। মেয়ের লাশ হাসপাতালে রেখে ওর স্বামী ও শাশুড়ি পালিয়ে চলে যায়। ওই গৃহবধূর মা বলেন, মেয়ের লজ্জাস্থান দিয়ে রক্ত বের হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী এক মহিলা বলেন, হাসপাতালে ওই মহিলাকে আনার পরে জীবিত ছিল। আমি তার মুখে হাত ও জিহ্বা দিয়ে মুখের ভেতর চেক করে দেখেছি মুখে কোন বিষ বা ঔষধের গন্ধ নেই। আমার মনে হয় কোন প্রকার বড় ধরণের আঘাত দেয়ার পর মারা গেছে।
নিহত গৃহবধূর স্বামীকে তাদের বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায়নি। তার দুটি মোবাইলে ০১৯৬৬৩৫৮৯৭৪ ও ০১৯৪৪৯৭৯৩৯১ নাম্বারে একাধিকবার কল করেও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
পুলিশের উপ-পরিদর্শক উত্তম কুমার বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে লাশের সুরতহালে প্রাথমিক অবস্থায় কোনপ্রকার আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। নিহত গৃহবধূর লাশ ফরিদপুর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। সেখান থেকে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, ফরিদপুরের সালথায় মায়ের ওপর অভিমান করে বাবার মাফলার গলায় পেঁচিয়ে শাহেলা আক্তার (৯) নামে এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। গত রবিবার সন্ধ্যার পর উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের জয়কাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাহেলা জয়কাইল গ্রামের কৃষক মো. বিল্লাল মোল্লার একমাত্র মেয়ে। সে জয়কাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহত ওই ছাত্রীর পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, গত রবিবার বিকাল ৫টার দিকে শাহেলাকে তার মা সেলিনা বেগম ৫ টাকা হাতে দিয়ে দোকান থেকে একটি সুতার কাঠিম কিনে আনতে বলে। কিন্তু শাহেলা সুতার বদলে একটি খাবার (বিস্কুট) কিনে আনে। বিষয়টি নিয়ে সেলিনা তার মেয়েকে রাগারাগি করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহেলা ঘরের ভিতরে গিয়ে আড়ার সঙ্গে বাবার মাফলার গলায় পেঁচিয়ে ঝুলে পড়ে। পরে পরিবারের লোকজন তাকে আড়া থেকে নামিয়ে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শেখ সাদিক বলেন, খবর পেয়ে ওই স্কুলছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানা একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।