তিলক রায় টুলু, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : ঈদকে সামনে রেখে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চোরাকারবারিরা। নিত্য নতুন কোৗশল অবলম্ভন করে এ সব পণ্য অবৈধ ভাবে নিয়ে এসে জেলা শহর থেকে শুরু করে ছোট ছোট হাট বাজারে তা বিক্রি করছে। বর্তমান চোরা কারবারিরা স্থানীয় প্রশাসন ও বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট এবং এজেন্টকে সাথে নিয়ে এ সব মালামাল পাচার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বড় ঈদকে সামনে রেখে চিনি, মসলা হুইচকি, ভারতীয় মদ ও কসমেটিক দ্রব্য শ্যামগঞ্জ ও পূর্বধলা বাজার সহ নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে চলে যাচ্ছে।
নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ জেলার সংযোগস্থল শ্যামগঞ্জ বাজারে পাঁচটি সিন্ডিকেট গ্রুপ এ সব মালামাল আনা নেওয়া করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তার চেয়ে আর্শ্চয্যের বিষয় দুইটি থানা দূর্গাপুর ও পূর্বধলা থানা পুলিশের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে কিভাবে এসব অবৈধ মালামাল নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছে ? তেমনি গত ২৪ মে শ্যামগঞ্জ রেল স্টেশন এলাকার একটি গেরেজ থেকে ২৬ বস্তা চিনির একটি চালান আটক করে স্থানীয় একটি চক্র। পরে খবর দেয়া হয় গৌরীপুর থানা পুলিশ কে। খবর পেয়ে গৌরীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং ঘন্টা ২ ঘন্টা মালিক পার্টির সাথে দেনদরবার করে অবশেষে চিনি ছেড়ে দিয়ে চলে যান বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে কোন মামলা বা কাউকে আটক করেননি গৌরীপুর থানা পুলিশ।
এ ছাড়া ১৬ এপ্রিল পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান প্রিন্স গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিত্বে উপজেলার পাট বাজার এলাকার শৈলেন্দ্র চন্দ্র দাসের গোদামে অভিযান চালিয়ে ৭৯ বস্থা ভারতীয় চিনি জব্দ করে এবং শৈলেন্দ্র চন্দ্র দাসকে আটক করে।
ভারতীয় অবৈধ পণ্য পাচারের নিরাপদ সড়ক হচ্ছে দূর্গাপুর-পূর্বধলা -ময়মনসিংহ ও কলমাকান্দা-নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। দীর্ঘদিন ধরে এ সড়ক পথে ভারতীয় চিনি, বিস্কুট, মসলা, ক্রিম, শীতের কাপর শাড়ী, লুঙ্গি,বিদেশী মদ, হুইচকি কম্বলসহ বিভিন্ন ধরনের পর্ণ্য এ সড়ক পথ ধরে বিভিন্ন উপজেলা এবং পাশ্ববর্তী জেলা সদরে প্রবেশ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।
জানাযায় নেত্রকোনা জেলার ভারতীয় সীমান্ত ঘেষা দূর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলার উপর দিয়ে বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে এ সব অবৈধ ভারতীয় পর্ণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।
অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন আইন প্রনয়ন সংস্থাকে অলিখিত ভাবে মেনেজ করে প্রতিদিন ৮/১০ টি করে ছোট ছোট পিআপে করে দিনে এবং রাতে নির্বিঘ্নে পৌঁছে যাচ্ছে এ সব পণ্যবাহী ট্রাক ।
সড়কে আইন শৃংখলা বাহিনী কাজ করলেও উপর মহলের গ্রিন সিগন্যাল থাকার কারনে তারাও অসহায়। দীর্ঘদিন ধরে এ সড়ক পথে পিআপের পর পিআপ ভারতীয় পণ্য পাচার হলেও মাত্র হাতে গোনা ২/৩ টি গাড়ী আটক করতে পেরেছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। আর হাইওয়ে পুলিশ সন্ধ্য থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শ্যামগঞ্জ-ময়মনসিংহ সড়কের বেলতলি নামক স্থানে চেকপোস্ট করলেও তারা অবৈধ ভারতীয় পর্ণ্য ভর্তি ট্রাক আটক করতে ব্যার্থ হয়েছে। তাদের সাফল্যের পাল্লা নেই বললেই চলে। অপর দিকে শ্যামগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ সারারাত্র টহল দিলেও তাদের চোখ ফাঁকি দিয়েও এ সব অবৈধ মাল বোঝাই পিআপ গুলি নিরাপদে নিজ নিজ গন্তের্বে চলে যাচ্ছে। এদিকে একটি চক্র ভারতীয় পর্ণ্য ভর্তি ট্রাক গুলি বিভিন্ন সময় আটক করে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে ভয় ভিতি প্রদর্শন করে অর্থ লেনদেনের পর ট্রাক ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন এ সব ঘটনা জেনেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারেনি। ফলে চোরা কারবারিদের নিরাপদ সড়ক হচ্ছে কলমাকান্দা-নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ এবং দূর্গাপুুর-শ্যামগঞ্জ- ময়মনসিংহ সড়ক।
ঈদ পুজাকে সামনে রেখে চোরা কারবারিরা আরো বেপোরোয়া হয়ে উঠে। স্থানীয় প্রশাসনকে মেনেজ করে এ সব অবৈধ পণ্য নিরাপদে পৌঁছে যাচ্ছে নিদিষ্ঠ স্থানে আর সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টার রাজস্ব।
এ ব্যাপারে শ্যামগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ মঞ্জুরুল হক জানান জানান তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না।
শ্যামগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ রাশেদুল ইসলাম জানান আমাদের সোর্স না থাকায় আমরা অবৈধ ট্রাকগুলি আটক করতে পারছি না। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি অবৈধ পণ্যবাহী ট্রাকগুলি আটক করতে।
পূর্বধলা থানার ওসি মোঃ সাইফুল ইসলাম এ ব্যাপরে জানান আমিও শুনেছি এ সড়ক পথে প্রচুর ভারতীয় মালামাল পাচার হচ্ছে তবে আমি আটক করতে পারছিনা। কোন রকম খবর পেলে আমাকে জানাবেন।