মো. মহিউদ্দিন, কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) থেকে
‘মা তুমি আবার এসো’ ভক্ত কণ্ঠের এই আকুতির ভেতর প্রতিমা বিসর্জনে বিদায় হলো দুর্গতিনাশিনী দুর্গা। শেষ হলো বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। পাঁচদিনব্যাপী দূর্গোৎসবের শেষদিনে মন্ডপে মন্ডপে দশমীর বিহিত পূজার মধ্য দিয়ে ঘটে সমাপ্তি। অতঃপর দেবীর বিসর্জন আর শান্তিজল গ্রহণ।
বিজয়া দশমীর আনুষ্ঠানিকতা শেষে চট্টগ্রামের পারকি সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। গত বুধবার দুপুর ১২টা থেকে সমুদ্র সৈকতে শুরু হয় একে একে প্রতিমা বিসর্জন। তেল-সিঁদুর পরিয়ে, পান, মিষ্টি মুখে দিয়ে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানাতে পারকি সমুদ্র সৈকতে ভিড় করেছেন ভক্ত ও অনুরাগীরা। নানা ধর্মের, নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষের অংশগ্রহণে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান হাজারো মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।
হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী, এ বছর দেবী দুর্গা মর্ত্যে এসেছেন গজে। কৈলাসে ফিরে যাচ্ছেন নৌকায় করে। ‘গজে চ জলদা দেবী শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা’ অর্থাৎ মা গজে গমন করলে পৃথিবীতে জলের সমতা বজায় থাকে এবং শস্য ফলন ভালো হয়। সুখ সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ থাকে মর্ত্যভূমি।
গত বুধবার বেলা ১১টা থেকে চট্টগ্রামের আনোয়ারা-কর্ণফুলীর বিভিন্ন পূজামন্ডপ থেকে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য ট্রাকবাহী প্রতিমা নিয়ে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে পূজারী ও ভক্তরা জড়ো হতে শুরু করেন পারকি সৈকতে। এরপর শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জনের পালা। শঙ্খ উলুধ্বনির পাশাপাশি বাদ্যের ঘণ্টা বাজিয়ে ‘জয়, দুর্গা মায়ের জয়’ বলে একের পর এক প্রতিমা ভাসিয়ে দেওয়া হয় সাগরে। মহাদশমীতে দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গাকে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পাঁচদিনব্যাপী দুর্গাপূজা। দুর্গার বিদায় উপলক্ষে সকাল থেকে বিদায়ের সুর বেজে উঠে বিভিন্ন মন্ডপে।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহমুদ জানান, শান্তিপূর্ণভাবে সাগরে প্রতিমা বিসর্জন দিয়েছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। নির্বিঘ্নে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সৈকত ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কর্ণফুলী উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে মোট ১৫টি মন্ডপে এবার দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়।
আনোয়ারা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দোলন মজুমদার বলেন, আনোয়ারায় ১১টি উপজেলায় সবমিলিয়ে ২৫৫টি মন্ডপে এবার দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়।