ভান্ডারিয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি : পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় সাদিয়া আক্তার মুক্তা (১৮) নামের এক গৃহবধূকে শ^াসরোধ করে হত্যার অভিযোগে স্বামী ও শাশুড়িসহ ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। হত্যার শিকার নারী ভান্ডারিয়া পৌর শহরের টিএন্ডটি সড়কের মুনিম জোমাদ্দারের স্ত্রী।
স্থানীয় ও ভান্ডারিয়া থানা সূত্রে জানা গেছে, ভান্ডারিয়া পৌর শহরের টিএন্ডটি সড়কের মামুন জোমাদ্দারের ছেলে মুনিম জোমাদ্দার বছর খানেক আগে ভান্ডারিয়ার শ্রীপুর গ্রামের মজিবুর রহমান মুন্সির মেয়ে মুক্তাকে বিয়ে করে। কয়েকদিন আগে পারিবারিক কলহের কারণে মুক্তাকে তার স্বামী মারধর করে। এ ঘটনার পর মুক্তা বাবার বাড়ি চলে যায়। গত শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে মুনিম মুক্তাকে নিয়ে আসে। মুনিম তার শাশুড়িকে ফোন করে বিকাল ৩টার দিকে জানায়, তার মেয়েকে সে হত্যা করেছে। পরবর্তীতে স্থানীয় চৌকিদার নুর মিয়াও মুক্তার মাকে এ তথ্য জানান।
মুক্তার স্বামী মুনিম জানায়, মুক্তাকে নিয়ে কাঠালিয়ার চেচরী রামপুর ব্রীজের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই মুনিমের বেশ কয়েকজন বন্ধুবান্ধব উপস্থিত হয়। তাদের সহযোগিতায় হিজাব পেঁচিয়ে শ^াসরোধ করে কাছে থাকা বেড়িবাঁধের পাশে লাশ ফেলে রাখে। ঘটনাটি মুনিম তার মা ছবি আক্তারকে জানালে ছবি সেখানে লাশ দেখতে যায় এবং সেখান থেকে লাশ এনে ভান্ডারিয়ার কানুয়া গ্রামের একটি ইট ভাটার পাশে কচুরিপানার মধ্যে লুকিয়ে রাখে।
এদিকে লাশের ব্যাপারে গভীর রাতে অজ্ঞাত নম্বর থেকে ভান্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ফোনে একটি কল আসে। সংবাদ পেয়ে ভান্ডারিয়া থানা পুলিশ রাত পৌনে ৪টায় সেখানে যায় এবং লাশ উদ্ধার করে গতকাল শনিবার সকালে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ মুক্তার স্বামী মুনিম (২৫), শাশুড়ি ছবি আক্তার (৪৫), অটোচালক শাকিব খন্দকার (১৮), মারুফ (১৮) ও সিয়াম খান সজিব (২১)সহ ৫ জনকে আটক করে।
ভান্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আশিকুজ্জামান জানান, তিনি রাতে অজ্ঞাতনামা একটি ফোন থেকে হত্যার ঘটনা জানতে পারেন। সাথে সাথে থানার অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তা ও ফায়ার সার্ভিসের লোক নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ৫ জনকে আটক করা হয়েছে এবং নিহতের মা জেছমিন বেগম বাদী হয়ে মেয়ের জামাতা মুনিম জোমাদ্দারকে ১নং আসামী করে ভান্ডারিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে ।