তোফাজ্জল হোসেন,নরসিংদী প্রতিনিধি:
নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর সভার বাসিন্দা বাঘা নাজমুল পলাশবাসীর জন্য রীতিমতো এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। বাঘা নাজমুল ও তার বাহিনীর আতঙ্কে কাঁপছে গোটা পলাশ। কিন্তু বলার কেউ নেই। তাকে নির্বৃত্ত করারও কেউ নেই। তার বিরুদ্ধে রয়েছে চাঁদাবাজি, রাতের আধারে পিডিবি থেকে লাখ লাখ টাকার বিভিন্ন মালামাল পাচার, মাদক ব্যবসা ও নারী নির্যাতনসহ নানা অভিযোগ। তার বিরুদ্ধে পলাশ থানায় রয়েছে একাধিক মামলা। বাঘা নাজমুল তার নামানুসারে গড়ে তোলেছে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী। নাম শুনলেই কেঁপে উঠে আবালবৃদ্ধবনিতা। ভয়ে মুখ খুলতে চায়না কেউ। চাঁদাবাজি, মাদক ও পিডিবি থেকে মূল্যবান মালামাল পাচার বাবদ তার মাসিক আয় ২০ লাখ টাকা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আইজি, ডিআইজি ও দলীয় প্রভাব এবং অবৈধ অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সে নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে তার সন্ত্রাসের রাজত্ব। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে নরসিংদী জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবরে দাখিলকৃত এক লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, আওয়ামীলীগ নামধারী মো: নাজমুল হোসেন মৃধা ওরফে বাঘা নাজমুল এলাকায় বিনাবাধায় ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে এবং পাশাপাশি বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকার কোন লোক তার বিরুদ্ধে কথা বলার পর্যন্ত সাহস পাচ্ছেনা। সাধারণ মানুষ নীরবে তার সকল অত্যাচার সহ্য করে যাচ্ছে। নাজমুলের অপকর্মে এলাকার কেউ বাধা দিতে গেলে সে তাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে পুলিশ দিয়ে অযথা হয়রানী করে আসছে। মাদক ও চাঁদাবাজির টাকা দিয়ে বাঘা নাজমুল একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলে। আর এ বাহিনীর মাধ্যমে সে বিভিন্ন স্থানে মাদক পাচার করে আসছে। অভিযোগে আরো বলা হয়েছে এলাকার সুন্দরী নারীদের সে এবং তার বাহিনীর লোকেরা ইজ্জত লুন্টন করছে। বিশেষ করে স্কুল কলেজ পড়ুয়া যুবতীরা তার ভয়ে ঠিকমত স্কুল-কলেজে যেতে পারছেনা। বাঘা নাজমুলের কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই। সে নিজকে আওয়ামীলীগ নেতা বা বঙ্গবন্ধুর আর্দশের সৈনিকলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে আসছে। অথচ সে আওয়ামীলীগ বা অঙ্গ সংগঠনের কোন সদস্য নয়। নাজমুল বিভিন্ন সময় স্থানীয় এমপি-মন্ত্রী-আইজি-ডিআইজি তার নিকটতম আত্মীয় বলে পরিচয় দিয়ে মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বাঘা নাজমুল শুধুমাত্র এখানেই তার ভানুমতির খেলা শেষ করেনি, সরকারি প্রতিষ্ঠান পলাশের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র (পিডিবির) অফিস থেকে রাতের আধারে প্রতিনিয়ত লাখ লাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন মালামাল পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে। পিডিবির কোন লোক তার ভয়ে কথা বলার বা প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা। বাঘা নাজমুল দীর্ঘদিন যাবত এলাকায় মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌরসভার ভাগ্যেরপাড়া গ্রামের মৃত: আফজাল হোসেন মৃধার পুত্র নাজমুল হোসেন মৃধা একজন সাধারণ পরিবারের ছেলে। তার পিতা পলাশ কো-অপারেটিভ জুট মিলে চাকুরী করতেহন। এইচএসসি পাশ করা নাজমুলের উত্থানের গল্প যেন বাংলা সিনেমাকেও হার মানায়। খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে- নাজমুল একজন মাদক সম্রাট হিসেবে এলাকায় পরিচিত। বিষয়টি নিয়ে মো: নাজমুল হোসেন মৃধার সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। আমি রাজনীতি করি এবং পাশাপাশি ব্যবসা করি। পলাশ থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন জানান, নাজমুলের বিরুদ্ধে পলাশ থানায় ২টি মামলা রয়েছে-১টি হচ্ছে মাদক মামলা এবং অপরটি হচ্ছে চুরির মামলা। যাহার মামলা নং-১২ (৬)১৯ তাং-২৩/৬/১৯ইং। মামলা নং-১৭/৭/ ১৯ তাং-১৮/৭/১৯ইং।