শীতলক্ষ্যা নদীতে মোট ৫টি লঞ্চ ডুবির ঘটনা ঘটেছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই আকস্মিক লঞ্চ চলাচল বন্ধের নির্দেশনা দেয়ায় সকাল থেকেই মুন্সীগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনালে এসে দুর্ভোগে পড়তে দেখা যায় যাত্রীদের। অনেকেই ব্যাগ ও অন্যান্য মালামাল নিয়ে লঞ্চ টার্মিনালে এসে লঞ্চ না পেয়ে ফেরত যান। চাঁদপুরের যাত্রী তালুকদার জানান, কর্তৃপক্ষ আগাম কোন নোটিশ না দিয়ে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করায় আমরা দুর্ভোগে পড়েছি। এখন বিকল্প উপায়ে কিভাবে গন্তব্যে যাব সেটাই ভাবছি। লঞ্চ চালুর দাবি মালিক সমিতির। এদিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধের নির্দেশনা দেয়ার প্রতিবাদে গতকাল সোমবার দুপুরে লঞ্চ টার্মিনালে নিজস্ব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতি নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জেলা শাখার সভাপতি বদিউজ্জামান বাদল। সংবাদ সম্মেলনে বদিউজ্জামান বাদল বলেন, শীতলক্ষ্যা নদীতে দূর্ঘটনার অন্যতম কারণ হচ্ছে নদীর প্রশস্ততা কমে যাওয়া এবং নদীর উভয় তীরে গড়ে উঠা অসংখ্য কলকারখানার জাহাজগুলো এলোপাথারি বার্থিং। এছাড়া শীতলক্ষ্যা নদী দিয়ে বালুবাহী বাল্কহেড চলাচলও অনেক বেড়েছে। তবে নদীতে ট্রাফিক কন্ট্রোল চালু হয়নি। যেকোন দূর্ঘটনা ঘটলেই সব দোষ শুধুমাত্র লঞ্চ চালক, শ্রমিক ও মালিকদের উপর চাপানো হয়। ইতিপূর্বে শীতলক্ষ্যা নদীতে যে ৫টি লঞ্চ ডুবির ঘটনা ঘটেছে তাতে প্রথমে বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তা বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছে। প্রতিটি মামলাতেই জাহাজের মালিকপক্ষকে বাদ দেয়া হয়েছে। এতে মনে হচ্ছে তারা ম্যানেজ মামলা দায়ের করেছে। উপরন্তু যাদের ধাক্কা দিয়ে ডুবিয়ে দেয়া হয়েছে সেসব লঞ্চ মালিকপক্ষকেও আসামী করা হয়েছে। আমরা মামলা দায়ের করতে চাইলেও আমাদের মামলা নেয়া হয়নি। গতকাল সোমবার সকালেও ডুবে যাওয়া লঞ্চটির মালিক দিল মোহাম্মদের পুত্র মোঃ আল ইসলাম বন্দর থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে তার মামলার আবেদন পুলিশ গ্রহণ করেনি। এতে মনে হচ্ছে বিআইডব্লিউটিএ নাটক করছে। গেল বছরেও লঞ্চ ডুবির ঘটনায় বিআইডব্লিউটিএ মামলা দায়ের করলেও সেই মামলা কিন্তু আপোষ পর্যায়ে চলে গেছে। আপনারা অনেকেই লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার ভিডিও ফুটেজ দেখেছেন। যদি কার্গো জাহাজটি বেকার দিতো অর্থাৎ স্পীড কম করতো তাহলে ওই লঞ্চটি ডুবতো না। আমাদের লঞ্চগুলোর শতভাগ ফিটনেস ছিল। ফিটনেস ছাড়া কোন লঞ্চ চলাচলের অনুমতি নেই। লঞ্চগুলোকে কেন আধুনিকায়ন করা হচ্ছেনা এমন প্রশ্নে বদিউজ্জামান বাদল বলেন, আগে কাঠের বডিগুলো পাল্টে স্টিলের বডি করা হয়েছে। তবে আমাদেরকে সরকারের কোন সংস্থা সহযোগিতা করেনি। সরকারের তরফ থেকে সহযোগিতা পেলে আমরাও লঞ্চগুলোকে আধুনিক করতে চাই। কিন্তু আমাদের কোন ধরনের নির্দেশনা না দিয়ে আকস্মিক বলপূর্বক সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই নদীতে পণ্যবাহী জাহাজ কোস্টার বাল্কহেড ও যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলের জন্য রিভার ট্র্যাক করা হোক। এর আগেও রিভার ট্র্যাকের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলেও ওই পর্যন্তই। নারায়ণগঞ্জ থেকে ৭টি রুটে ৭০টি লঞ্চ চলাচল করে থাকে। যার মধ্যে ২টি রুট নাব্যতা সঙ্কটে বন্ধ হয়ে গেছে। বাকী ৫টি রুট সচল ছিল। এসব লঞ্চের প্রতিটিতে ৮ জন শ্রমিক করে ৫ শতাধিক শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। লঞ্চ চলাচলের অনুমতি না দিলে এসব শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়বে। এজন্য আমরা অতিদ্রুত লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দাবি করছি।