নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও লক্ষ্য মাত্রার অধিক জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভূট্টা আবাদ হয় ৬৫ হেক্টর জমিতে যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ৩০ হেক্টর বেশি। ভূট্টা দুইভাবে কৃষক ব্যবহার করে এক. ভূট্টার বয়স ৬০-৬৫ দিন বয়সে সাইলেজ হিসেবে গোখাদ্যে দুই. দানা হিসেবে পোল্ট্রি শিল্পে। নবীনগর উপজেলার ২১ ইউনিয়নে মধ্যে সলিমগঞ্জ, ইব্রাহিমপুর, শ্রীরামপুর, লাউর-ফতেহপুর, কাইতলা ইউনিয়নে ভূট্টা আবাদ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে শ্রীরামপুর ইউনিয়নে প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে। এ সকল জমি তিতাস নদী বিধৌত পলিযুক্ত মাটি খুব উর্বর, তাই এসব এলাকায় ভুট্টার ফলন অধিক হয়ে থাকে। সরেজমিনে এসব ইউনিয়নের মাঠ গুলো ঘুরে ভুট্টা চাষের এই দৃশ্য দেখা গেছে। কম খরচে অধিক মুনাফা অর্জনের ফলে দিন দিন ভুট্টা চাষের জন্য কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠেছে। উপজেলার শ্যামগর, শ্রীরামপুর ইউনিয়নের শাহবাজপুর গ্রামের কৃষক হানিফ মিয়া বলেন- “ভুট্টা চাষে খরচ কম, লাভ বেশি, তাই আমি এ বছর ৩ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছি। আশা করি ভুট্টার ভাল ফলন হবে”। রতনপুরের কৃষক কামাল বলেন- আমি এ বছর ১ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছি। আবহাওয়া ভাল থাকলে ভুট্টার ফলন বেশি হবে বলে আমি আশা করি। উপজেলার ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর গ্রামের কৃষক মোঃ সুমন মিয়া-১ এ বছর ভুট্টা চাষ করেন ৪ বিঘা, শান্তনা বেগম ১.৫ বিঘা, সুমন-২ বিঘাসহ এ কৃষিব্লকে মোট ৪৫ বিঘা জমিতে এ বছর ভূট্টা চাষ হয়। প্রতি বিঘা জমিতে ২০-২৫ মণ হারে ফলন হয়ে থাকে। নবীনগর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে নবীনগর উপজেলার ৬০০ শত হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে চলতি বছরে ভুট্টার চাষ হচ্ছে। অল্পদিনে ও কম খরচে ভুট্টাচাষ হওয়ায় এখানকার কৃষকেরা ভুট্টা চাষের দিকে ঝুঁকেছে। কম পূঁজি, ঝুঁকিহীন হওয়ায় কৃষকরা ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এ ছাড়া সরকার কৃষি প্রণোদনা স্বরূপ কৃষকদের মাঝে উন্নত জাতের বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিসার জাহাঙ্গীর আলম লিটন বলেন-“চলতি বছরে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভুট্টার ফলন ভাল হবে বলে আশা করি। ভূট্টার গড় দাম এই মূহুর্তে ১,৪০০টাকা মন। উৎপাদন খরচ কম হওয়াতে কৃষক উদ্ধুদ্ধ হচ্ছে। এছাড়া ভূট্টা অফ সিজনে গো-খাদ্যের যোগান দিচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ কৃষকদেরকে ভূট্টা বালাই ব্যবস্থাপনা এবং উন্নত জাত ব্যবহার সম্পর্কে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন”।