নওগাঁ প্রতিনিধি
নওগাঁ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সিকিউরিটি গার্ডকে জিম্মি করে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতরা কলেজের কম্পিউটার সফটওয়্যার ল্যাবের তালা ভেঙে ৪০টি পিসির প্রায় ১২ লাখ টাকা মূল্যের যন্ত্রাংশ লুট করেছে বলে জানা গিয়েছে। সিকিউরিটি গার্ডদের অধ্যক্ষের ব্যক্তিগত কাজে নিয়োজিত রাখায় কলেজটি এ ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শহরের আরজী নওগাঁ লাটপাড়া মহল্লায় অবস্থিত নওগাঁ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে প্রতিদিনের মতো গত বৃহস্পতিবার রাতে ডিউটিতে আসেন সিকিউরিটি গার্ড ফরিদুল ইসলাম। ডিউটিরত অবস্থায় আনুমানিক রাত সাড়ে ১১টায় আকস্মিক তার ওপর হামলা করে বেদম মারধর করে দু’জন মাস্ক পরিহিত ডাকাত। ফরিদুল জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তার মুখে কাপড় দিয়ে রেলিংয়ের সঙ্গে বেঁধে রাখে ডাকাতদলের সদস্যরা। এরপর একাডেমিক ভবনের তৃতীয় তলায় ৩০৫ নম্বর কক্ষের কম্পিউটার সফটওয়্যার ল্যাবের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ডাকাতরা। সেখানে থাকা প্রায় ৪০টি কম্পিউটার থেকে এসএসডি, হার্ডডিস্ক, মাদারবোর্ড, র্যাম ও প্রসেসর খুলে নেয় তারা। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১২ লাখ টাকা। এরপর সিকিউরিটি গার্ডকে সেখানে ফেলে রেখে চলে যায় তারা। গত শুক্রবার ভোর ৫টায় কলেজের পরিচ্ছন্নতাকর্মী সেকেন্দার আলীর মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন অধ্যক্ষ। তাৎক্ষণিক সেখানে ছুটে আসেন শিক্ষকরা। পুলিশকে মুঠোফোনে জানানোর পর ফরিদুলকে উদ্ধার করা হয়।
কলেজের গাড়িচালক গোলাম ফরিদ শেখ বলেন, ভোর ৫টায় কলেজে ডাকাতি হওয়ার খবরটি জানিয়ে জরুরী ভিত্তিতে আসতে বলা হলে শিক্ষকদের নিয়ে ক্যাম্পাসে এসেছিলাম। সিকিউরিটি গার্ডকে বেঁধে রাখা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে স্যাররা কম্পিউটার ল্যাবে গিয়ে দেখেন ৪০টি কম্পিউটারের মূল্যবান যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গিয়েছে। সিসি ক্যামেরায় ডাকাতির পুরো দৃশ্য স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। তবে মাস্ক পরিহিত থাকায় ডাকাতদের চেনা যায়নি।
সিকিউরিটি গার্ডদের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থায় উদাসীনতার বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আব্দুর রকিব বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনো গাফিলতি ছিল না। বিষয়টি থানায় অভিযোগ করার পর কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে জানানো হয়েছে। জনবল সংকটের কারণে মাঝেমধ্যে মানিকসহ বিভিন্নজনকে দিয়ে কলেজের অন্যান্য কাজ করানো হয়। তবে কাউকে ব্যক্তিগত কাজে সবসময় ব্যবহারের অভিযোগটি সঠিক নয় বলে তিনি দাবি করেন।
নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি ফয়সাল বিন আহসান বলেন, এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।