শরীয়তপুর প্রতিনিধি
শরীয়তপুর পৌর বাস টার্মিনালটি ছোট হওয়ায় তাতে এখন ধারন ক্ষমতা নেই। এ কারণে সড়কের ওপর থেকেই গাড়িতে যাত্রী ওঠাতে হয়। এর ফলে শহরের সড়কে প্রায়ই যানজট লেগে থাকে । এ কারণে চলাচলকারী যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন।
শরীয়তপুর বাস মালিক সমিতি সূত্র জানায়, নব্বইয়ের দশকে শরীয়তপুর জেলার ভেতরে বাস চলাচল শুরু হয়। তখন সড়কের ওপরেই বাস রেখে যাত্রী ওঠা-নামা করা হত। ওই সময়ের বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহম্মেদ তালুকদার ও তার ভাই ফরিদ আহম্মেদ তালুকদার বাস টার্মিনাল নির্মাণের জন্য বাঘিয়া ও চরপালং এলাকায় শরীয়তপুর পৌরসভাকে এক একর জমি দান করেন। ১৯৯৮ সালে পৌর কর্তৃপক্ষ সেই জমিতে বাস টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এরপর ২০১০ সালে সেখানে একটি ভবন নির্মাণ করে বাস টার্মিনালের যাত্রা শুরু করে পৌরসভা।
চলতি বছরের ২৫ জুনের আগ পর্যন্ত ওই টার্মিনাল থেকে জেলার সকল উপজেলা, মাদারীপুর, খুলনা, বেনাপোল ও সাতক্ষীরায় বাস চলাচল করত। ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ঢাকা-শরীয়তপুরে বাস চলাচল শুরু হয়। জেলার অন্তত ২৫ হাজার যাত্রী প্রতিদিন ওই টার্মিনাল দিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করে। বর্তমানে সাড়ে তিনশ বাস বিভিন্ন গন্তব্যে চলছে।
এক একর জমিতে নির্মাণ করা বাস টার্মিনালে ৫০টি বাসের ধারন ক্ষমতা রয়েছে। অন্য বাসগুলো শহরের আসনার ব্র্যাকের সামন থেকে প্রেমতলা পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে রাখা হয়।
ঢাকা-শরীয়তপুর সড়কের শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস বাসের চালক কামাল হোসেন বলেন, টার্মিনালে কোন বাস রাখা যাচ্ছে না। সেখানে পুরাতন কিছু বাস রেখে দখল করা হয়েছে। ঢাকা যাতায়াতের সকল বাস রাস্তার মধ্যে রেখে যাত্রী তোলা হয়। এ কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি হয়। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে।
সড়কের অটোচালক দুলাল হোসেন ও সিএনজি চালক শাহজাহান হাওলাদার বলেন, সড়কের ওপরে বাস রাখা হয়। এ কারণে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যানজট হয়। আমাদের ছোট একটি জেলা শহর। এমন যানজটের সাথে আমরা অভ্যস্ত নই। অনেক দুর্ভোগ নিয়ে চলছি।
শরীয়তপুর জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক আহম্মেদ তালুকদার বলেন, আমাদের পরিবারের দেয়া জমিতে ছোট একটি বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এখন পরিবহন ব্যবসার অনেক সম্প্রসারণ হয়েছে। ওই টার্মিনালে স্থান সংকুলান হচ্ছে না। যাত্রীদের সাথে আমাদেরও সমস্যা হচ্ছে। বড় একটি বাস টার্মিনাল নির্মাণ করার জন্য অনেকবার পৌরসভাকে অনুরোধ করেছি। কিন্তু কোন সাড়া পাচ্ছি না।
জানতে চাইলে শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র পারভেজ রহমান জন বলেন, শহরের বাইরে পৌর এলাকার মধ্যে বাস টার্মিনালটি সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। জমি ক্রয় করার ফান্ড না থাকায় উদ্যোগটি ত্বরান্বিত হচ্ছে না। জমির ব্যবস্থা হলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পে বড় টার্মিনাল নির্মাণ করা যাবে।