ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের ধরলা নদের পানি বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) থেকে হু-হু করে বেড়ে গিয়ে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। ফলে এ জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) সকাল সাতটার দিকে কুড়িগ্রামের জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার ১ নং নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোড়কমন্ডপ গ্রামের সালাম মিয়া জানান, সকালে প্রতিদিনের ন্যায় গোড়ক মন্ডপ বাজারে চা খেতে আসার সময় দেখি বাজার থেকে গোড়কমন্ডপ বিজিপি ক্যাম্প যাওয়ার রাস্তাটি প্রায় ৫০ মিটার ভেঙ্গে গেছে। এর ফলে গোড়ক মন্ডপ (২ নং ওয়ার্ড) এর গোড়কমন্ডপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ পার্শ্ববর্তী বালাতাড়ী ও পশ্চিম ফুলমতি গ্রামের কয়েক’শ মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে ।
এ গ্রামের সোহেল মিয়া বলেন, সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছি বাজারে যাব বলে কিন্তু গত রাত থেকে টানা ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় আমাদের যোগাযোগের একমাত্র রাস্তাটি ভেঙ্গে যাওযায় আর বাজারে যেতে পারছি না । পারছি না বাজার ঘাট করতে । আমাদের গ্রামের প্রায় তিন শতাধিক মানুষ আটকা পড়ে আছে
গোড়ক মন্ডপ (২ নং ওয়ার্ড) এর ইউপি সদস্য জনাব মোঃ আয়াজ উদ্দিন এর ভাষ্যমতে, গোড়ক মন্ডপ বাজার থেকে ৩০০ গজ উত্তর দিকে বিজিপি ক্যাম্প যাওয়ার রাস্তাটি প্রায় ৫০ মিটার ভেঙ্গে গেছে। এ রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে গ্রামের ভিতরের আরও তিনটি রাস্তা ভেঙ্গে পানিতে প্লাবিত হয়েছে । বিজিপি ক্যাম্পের দক্ষিণ দিক ও বারোমাসিয়া নদী বন্যার পানিতে ভরাট হয়ে গেছে । অনেক ফসলি জমি ও সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় । মানুষের যোগাযোগ বিছিন্ন হলেও বাড়ী ঘরের তেমন ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি ।
পশ্চিম ফুলমতি গ্রামের (৪ নং ওয়ার্ড) এর ইউপি সদস্য জনাব মোঃ শহিদুল ইসলামে এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গোড়কমন্ডপ বিজিপি ক্যাম্প যাওয়ার রাস্তাটি ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে কান্দাপাড়া, কলাবাগান, দোলাটারী ও ঝাকুয়াটারীর প্রায় দেড় শতাধিক বাড়ী-ঘর তলিয়ে গেছে । অনেক ফসলি জমি ও সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে ।
বালাতাড়ী গ্রামের (৩ নং ওয়ার্ড) এর ইউপি সদস্য জনাব মোঃ মহির উদ্দিন বলেন, এ রাস্তাটির কিছু অংশ ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে বালাতাড়ীর ধুলারকুটি ও কাঞ্চারকুটি এলাকার প্রায় ৫০ টি পরিবারের বাড়ি-ঘর পানিতে প্লাবিত হয়েছে ।
১ নং নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব মোঃ হাসেন আশস্ত করেন, এ রাস্তাটি মেরামতের জন্য খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, শুক্রবার দুপুর ৩টার রিডিং অনুযায়ী দুধকুমার নদের পানি ৫৪ সেন্টিমিটার, ধরলা নদীর পানি ২১ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে তিস্তা নদীর পানি ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারীতে বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে যেভাবে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে এসব নদীর পানিও বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।