ইব্রাহিম হোসেন (রাজিব),জয়পুরহাট প্রতিনিধি:
জয়পুরহাট রেল স্টেশনের উপরে রাখা রেললাইনের হাজার হাজার পরিত্যক্ত পুরাতন কাঠের স্লিপার গায়েব হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। জয়পুরহাটে রেলস্টেশনের ৩নং লাইনটি কয়েক মাস আগে নতুন করে পুনঃস্থাপন করা হয়। আর এতে সেই পুরাতন কাঠের হাজার হাজার স্লিপারগুলো বাতিল করে পরিত্যক্ত হিসেবে রেলস্টেশনের উপর রাখা হয়। এরপর থেকেই গায়েব হতে থাকে স্লিপারগুলো। এদিকে রবিবার (০২ জানুয়ারি) বিকেলে এসব স্লিপার একটি পিকআপ যোগে স্টেশন থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় জনতা একটি পিকআপকে আটক করে জয়পুরহাট সদর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। আটককৃতরা হলেন, জয়পুরহাট সদর উপজেলার সুকতাহার গ্রামের মৃত আলিমুদ্দিনের ছেলে রেলওয়ের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী শামিম হোসেন ও একই গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে ট্রাক ড্রাইভার আকরাম হোসেন। আটককৃতরা জানান, তারা রেলওয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত হিলির উপ সহকারী প্রকৌশলী আব্দুস সালামের কাছ থেকে রশিদ মুলে কিনে নিয়ে এসব স্লিপার পিকআপ যোগে নিয়ে যাচ্ছিল। এ বিষয়ে রেলওয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত হিলির উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুস সালামকে মুঠোফোনে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই পরিত্যক্ত স্লিপারগুলো টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রয় করা হয়েছে। কিছুক্ষন পর তিনি আবার ফোন করে বলেন, টেন্ডারের মাধ্যমে নয় স্লিপারগুলো রেশন স্লিপ হিসেবে জ্বালানির জন্য রেলের চতুর্থ শ্রেণির রেল কর্মচারিদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। পরে তাকে মুঠোফোনে আবারও জানতে চাওয়া হলে তিনি একেক সময় একেক রকম কথা বলেন। তিনি বলেন, টেন্ডার ছাড়াই রেল কর্তৃপক্ষ স্লিপারগুলো বিক্রি করতে পারে। তাই আমি এসব স্লিপার বিক্রি করেছি বলে সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উল্টো মামলার হুমকি দেন। স্থানীয় এলাকাবাসী ও দোকানীদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন থেকে স্টেশনের হাজার হাজার পরিত্যক্ত কাঠের স্লিপার গুলো রাতের অন্ধকারে এক শ্রেণীর রেলওয়ের কর্মচারীরা হিলির উপ সহকারী প্রকৌশলী আব্দুস সালামের সাথে যোগসাজস করে বিক্রি করে আসছে। রবিবার (০২ জানুয়ারি) সেই স্লিপার ভর্তি এক ট্রাক হাতেনাতে আটক করে স্থানীয় জনতা। এ ব্যাপারে জয়পুরহাট রেলস্টেশন মাস্টার হাবিবুর রহমানের কাছে স্লিপারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ঘটনার ব্যাপারে আমার কিছুই জানা নেই। টেন্ডার ছাড়া কাঠের এই স্লিপার বিক্রির কোন প্রশ্নই ওঠে না। এ ব্যাপারে জয়পুরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহরিয়ার খাঁন জানান, এলাকাবাসীরা আমাকে অভিযোগ করলে আমি সেখানে থানার একজন পুলিশ অফিসারকে পাঠাই। সেই অফিসারকে আটককৃতরা টেন্ডারের কোন কাগজপত্র দেখাতে না পারায় ট্রাক ভর্তি স্লিপারসহ ২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় আনা হয়েছে। কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে এ ঘটনার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।