জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাটে দূর্গাদহ শাখা ব্র্যাক এর উদ্যোগে গতকাল বুধবার আল্ট্রা-পুওর গ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রামের দুই দশক পূর্তি এবং আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য বিমোচন দিবস উদযাপন হয়। জয়পুরহাট ব্র্যাকের জেলা সমন্বয়কারী আরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ আনোয়ার পারভেজ।
ব্র্যাকের সিনিয়র টেকনিক্যাল অফিসার অরুন কুমার রায়ের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম, জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ মাহফুজার রহমান, ভাদসা ইউপি চেয়ারম্যান সরোয়ার হোসেন স্বাধীন, ব্র্যাকের জোনাল ম্যানেজার কামরুল ইসলাম, সভাপতি ফরিদুজ্জামান লিটন প্রমুখ। জয়পুরহাটে ব্র্যাকের ২০২০ সাল পর্যন্ত আল্ট্রা-পুওর গ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রামের আওতায় এসেছে ১০,০৭৪টি অতিদরিদ্র পরিবার এবং বর্তমান ২০২১ এবং ২০২২ সালের আওতায় ৩,৬৮৩টি পরিবারের মাঝে কাজ চলমান রয়েছে।
আল্ট্রা-পুওরদের বৈশিষ্ট্যসমূহ হল- উৎপাদনশীল সম্পদ নেই, থাকলেও অপ্রতুল, দীর্ঘমেয়াদী খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন, অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিতে অভিগম্যতা নেই, নারীপ্রধান পরিবার এবং রক্ষণশীল পরিবেশ, সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন, দুর্গম এবং পিছিয়ে পড়া অঞ্চলে বসবাস করেন, রোগব্যাধি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঘাত সামলাতে পারেন না, বাজার ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্য সেবায় অভিগম্যতা নেই।
গ্র্যাজুয়েশন অ্যাপ্রোচ ব্র্যাক উদ্ভাবিত দারিদ্র্য বিমোচনের একটি কার্যকর এবং প্রমাণিত মডেল। এর মাধ্যমে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে আল্ট্রা-পুওর ও অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সর্বাঙ্গীন সহায়তা দেওয়া হয়। ফলে তাদের সম্পদ, কর্মক্ষমতা ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পেয়ে তাদের পরিবারের দারিদ্র্যমুক্তি এবং দীর্ঘমেয়াদে মানসিক ও আর্থসামাজিক অবস্থার টেকসই উন্নয়নে কাজ করে থাকে।
ব্র্যাক ২০০২ সালে আল্ট্রা-পুওর গ্র্যাজুয়েশন (ইউপিজি) প্রোগ্রামের মাধ্যমে গ্র্যাজুয়েশন অ্যাপ্রোচের বাস্তবায়ন শুরু করে। প্রাথমিকভাবে সদস্য হিসাবে নারীরা নির্বাচিত হলেও কর্মসূচীতে অংশগ্রহণের পর পুরো পরিবারটাই লাভবান হয়। অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর বহুমুখী প্রয়োজন এবং স্থানীয় প্রেক্ষাপট অনুযায়ী প্রোগ্রাম ডিজাইন এবং চলমান কার্যক্রমে পরিবর্তন, পরিমার্জন এবং পরিবর্ধন করা হয়। কর্মসূচীর বিভিন্ন উপাদানের মাধ্যমে সদস্যদের উন্নয়নের মূলধারার সাথে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে অভিগম্যতা বাড়ানো হয় এবং বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারি সেবার সাথে সম্পৃক্ত করা হয়।
দারিদ্র্য কেবল টাকা-পয়সা বা আয়ের দারিদ্র্য নয়, আত্মমর্যাদা, আশা ও সুযোগের দারিদ্র্যও দেখে নেয় এবং শক্তি সঞ্চয় করার মাধ্যমে দারিদ্রকে পরাজিত করে।