খোকন মজুমদার রাজীব,চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানাধীন ১৭ নং ওয়ার্ড পশ্চিম বাকলিয়াস্থ বগারবিল শান্তিনগর এলাকায় দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত বন্ধে ঘরে থাকা কৃষক, শ্রমিক ও দিনমজুরেরা সরকারি অনুদানকৃত খাদ্য সামগ্রী ( ত্রাণ ) ১০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও না পাওয়ায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে দিন যাপন করছে এই এলাকার কৃষক, শ্রমিক, দিন মজুর ও মধ্যবিত্ত পরিবার। সরেজমিনে জানা যায়, বাকলিয়া থানাধীন শান্তিনগর এলাকায় এ পর্যন্ত বেসরকারি সংস্থার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে তিন ভাগে থানা এবং ওয়ার্ড ভিত্তিক প্রতিনিধির মাধ্যমে মোট- ১৬৯ প্যাকেট ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। যার মধ্য, শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এর পক্ষে, শহীদুল আলম শহীদের তত্ত্বাবধানে, ২০ প্যাকেট, অন্য সংস্থার পক্ষে বাকলিয়া থানার তত্ত্বাবধানে, ১১৯ প্যাকেট ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির এর পক্ষে, জনপ্রতিনিধি এ কে এম আরিফুল ইসলাম ডিউকের তত্ত্বাবধানে ৪০ প্যাকেটসহ মোট ১৬৯ প্যাকেট ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করে বাকলিয়া থানাধীন ১৭ নং পশ্চিম বাকলিয়াস্থ বগারবিল শান্তিনগর ৩১ নং বিট কমিউনিটি পুলিশিং এলাকায়। আরও জানা যায়, হত দরিদ্রের হতাশাগ্রস্থ থেকে মুক্ত করার লক্ষে সহযোগিতায় হাত বাড়িয়ে দেয় এলাকার যুব সমাজ। তারা, তাদের প্রচেষ্টায় ও তাদের অর্থায়নে, শান্তিনগর বয়েজ ক্লাব ৩৬০ প্যাকেট এবং জন কল্যাণ আবাসি এলাকা কর্তৃক এস এন সমবায় সমিতি ২৩০ প্যাকেট ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন এই এলাকার হত দরিদ্র কৃষক শ্রমিক ও দিনমজুর পরিবারদের। এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলাকার বসবাস করা কিছু শ্রমিক দিনমজুররা বলেন, “আমাগোরে কয়েকদিন আগে পুলিশ ঘরে ঘরে আইসা একটা একটা প্যাকেট দিয়া গেছে। আর কয়েকদিন আগে এলাকার কিছু পোলা পাইন আইসা একটা একটা প্যাকেট দিয়া গেছে। আর হুনছি সরকারের থেইক্ষা আমাগো রে বেশি বেশি খাওন দিবো, কিন্তু অহনও পাইছি না। খালি মানুষ আইয়া নাম লিক্ষা আর মোবাইল লম্বর লিক্ষা লইয়া যাই। কিন্তু অহন কেউ কিছুই দিছেনা। মনে হয় সরকারি খাওন আমাগো কপালে নাই।” এসময় আরও জানা যায়, বাকলিয়া থানা কর্তৃক কমিউনিটি পুলিশ ৩১ নং বিট পুলিশিং শান্তিনগরে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের লক্ষে পুলিশ সদস্যরা এলাকার স্থানীয় নেতাদের সহায়তার মাধ্যমে দরিদ্র পরিবারদের একটি নামের তালিকা তৈরি করা হয়। যা ওই তালিকা অনুযায়ী এখনো পর্যন্ত কোনো ত্রাণ পায়নি বলে জানান হত দরিদ্র পরিবাররা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৩১ নং বিট পুলিশিং ইনচার্জ বাকলিয়া থানার উপপরিদর্শক নির্দশন বড়ুয়া বলেন, কমিউনিটি পুলিশের পক্ষে যে ত্রাণ দেওয়া হবে তা কমিশনার স্যার গত ০১ এপ্রিল উদ্বোধন করেছেন, আমারা তালিকা তৈরি করছি যথা সময়ে আমরা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবো। অন্যদিকে সরকারি ভাবে জেলা প্রশাসন এর পক্ষে ত্রাণ সামগ্রী সহায়তার কথা থাকলে, এ এলাকায় এখনো পর্যন্ত না পাওয়ায় আকুতি জানান এলাকার হতদরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা। গত ০৩ এপ্রিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার পরিবারকে নগরীর ৪১ টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর এর মাধ্যমে তালিকা তৈরি করে ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো পর্যন্ত কোনো ত্রাণ সামগ্রী পায়নি বলে জানান এলাকাবাসী। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন এর দেওয়া ফোন নাম্বার অনুযায়ী, জেলা প্রশাসনের ত্রাণ সহায়তা কন্ট্রোল রুমের ফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ না করায়, পরর্বতীতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ কামাল হোসেন এর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ত্রাণ সহায়তার বিষয়ে এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর এর সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এর পরামর্শ অনুযায়ী ওয়ার্ড কাউন্সিলর এর সাথে যোগাযোগ করা হলে কাউন্সিলর জানান, আমাদের কাছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো ত্রাণ সামগ্রী আসেনি। তবে আমাদের কাছে সিটি কর্পোরেশন এর পক্ষ থেকে কিছু ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়ে ছিলো তা আমরা আমাদের পক্ষ থেকে আরো কিছু দিয়ে এলাকায় দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করে দিয়েছি। এলাকার মধ্যবিত্ত এবং হতদরিদ্রদের প্রশ্ন, এ দূর্যোগে আমরা কর্মহীন ভাবে যদি ঘরে থাকা অবস্থায় এলাকায় এতো নেতা থাকতে এ দুঃসময়ে কেউতো এগিয়ে আসেনি তার মধ্যে সরকারি ভাবেও কোনো দান সহায়তা না পায়, তাহলে আমাদের পরিবার নিয়ে অনাহারে দিন কাটাতে হবে।