চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
কক্সবাজারের চকরিয়ার আলোচিত ব্যবসায়ী লতিফ উল্লাহ হত্যাকান্ডে জড়িত প্রধান কিলার মিজানুর রহমান (৪২) কে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ৫০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট নিয়ে আটক হয় ঘাতক মিজানুর রহমান। পরে তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে পটিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়। মিজান ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলার বালকদিয়া বিনয় কাঠি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মৃত জলিল আকনের ছেলে। পুলিশ জানায়, ঘাতক মিজানুর রহমান চকরিয়া পৌরশহরের ব্যবসায়ী লতিফ উল্লাহ হত্যা মামলা থেকে বাঁচতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম “খ” সার্কেল” পটিয়ার সাথে মাদক মামলায় জেলে যেতে কন্ট্রাক্ট করে। গত ১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ৫০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক হয় ঘাতক মিজান। পরে তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে পটিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়। মামলাটি দায়ের করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ-পরিদর্শক মুহাম্মদ খোরশেদ আলম। চকরিয়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মুহাম্মদ জুয়েল ইসলাম বলেন, গত ৭ জানুয়ারি গ্রেফতার হওয়া নয়নকে জিজ্ঞাসাবাদে বেশকিছু তথ্য পাওয়া যায়। এর সূত্র ধরে অভিযানে নামে পুলিশ। ঘাতক মিজানের নাম্বারে লতিফ উল্লাহর বিকাশ এজেন্ট থেকে ৩০ হাজার টাকার লেনদেনও হয়। সিসিটিভির ফুটেজ ও ঘাতক মিজানের ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ফোনের কল রেকর্ডের সূত্র ধরে গ্রেফতারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মাঠে নামেন। গত ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘাতকের মোবাইলে পটিয়া থানায় সর্বশেষ লোকেশন নিশ্চিত করে পুলিশ। তাকে পটিয়া থানা পুলিশ মাদক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে প্রেরণও করে। পরে ১৫ জানুয়ারি বিকেলের দিকে লতিফ হত্যাকান্ডে জড়িত ঘাতক মিজান গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত হন চকরিয়া থানা পুলিশ। পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যেন তাকে কোথাও খুঁজে না পায় সেজন্য মাদক মামলায় জেল হাজতে থাকার অভিনব কৌশলটি করেছিলো ঘাতক মিজান। জানা গেছে, চকরিয়া পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের হাইস্কুল সড়কের পাশে লতিফ উল্লাহর কোমল পানীয়সহ বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা ও বিকাশ এজেন্ট রয়েছে। গত ৩ জানুয়ারি ৯টার দিকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাসায় চলে যান। ওইদিন রাত ১০টায় হঠাৎ করে তার মোবাইলে ফোন আসে তার দোকান থেকে মালামাল বিক্রির জন্য। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ফিরে আসেন লতিফ। রাত সাড়ে ১০টায় পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা খুনিরা লতিফের চোখে মুখে মরিচের গুড়া ছিটিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন লতিফকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর থেকে খুনিদের গ্রেফতারের দাবীতে চকরিয়া, কক্সবাজার ও লোহাগাড়া উপজেলায় ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করতে থাকে। তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। ব্যবসায়ীরা দ্রুত সময়ে খুনিদের গ্রেফতারে কর্মসূচীও ঘোষণা করেন। এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওসমান গণি বলেন, ঘাতক মিজানুর রহমানকে লতিফ হত্যা মামলায় শূন্য অ্যারেস্ট দেখানো হচ্ছে। তাকে খুব শীঘ্রই চকরিয়া আদালতে এনে রিমান্ড চাওয়া হবে। রিমান্ডে আসার পর ঘটনার আসল রহস্য উদঘাটন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।